—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
শাসকদলের দাবি ছিল, কয়লা উত্তোলন শুরু হলে অনেক কাজের সুযোগ তৈরি হবে। পাশাপাশি, জমি দিলে মিলবে ক্ষতিপূরণ ও পরিবার পিছু এক জনের সরকারি চাকরি। অন্য দিকে, বিরোধীদের দাবি ছিল এ ভাবে আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। তাই তারা প্রকল্পের বিরোধিতায় নেমেছিল। বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের রামপুরহাট বিধানসভার মহম্মদবাজার ব্লকের ডেউচা-পাঁচামি এলাকার লোকসভা নির্বাচনের পরস্পর বিরোধী এই দাবি নিয়েই প্রচারে নেমেছিল যুযুধান দু’পক্ষ। ফল, বেরোলে দেখা গেল, এই অঞ্চলে আগের লোকসভা, বিধানসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির এগিয়ে থাকা এলাকায় এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের দাবি, কয়লা শিল্পাঞ্চল তৈরির সুফল মিলেছে এই ভোটে।
ডেউচা-পাঁচামি এলাকার কার্যত কেন্দ্রে অবস্থিত হিংলো পঞ্চায়েত। ২০২৩-এর পঞ্চায়েত ভোটে এই পঞ্চায়েতটি তৃণমূলের দখলে থাকলেও বিধানসভা বা লোকসভা ভোটে বিজেপি এগিয়ে ছিল। এ বারের লোকসভা ভোটে হিংলো পঞ্চায়েতে ২৪১টি ভোটে বিজেপির থেকে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। পাশাপাশি, সেকেড্ডা পঞ্চায়েতে ৮,৫৯৮টি এবং পুরাতনগ্রাম পঞ্চায়েত ৪,৭৮৮টি ভোটে বিজেপির থেকে এগিয়ে তৃণমূল।
২০১৯-এর লোকসভা ও ২০২১-এর বিধানসভার ভোটে ভাঁড়কাটা পঞ্চায়েতের পাঁচামি এলাকার বুথগুলিতে বিজেপির থেকে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। এ বার ২,৭৬৬টি ভোটে এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। সাঁইথিয়া বিধানসভার ডেউচা পঞ্চায়েতে গত লোকসভা ভোটে বিজেপির থেকে ১,২৯১টি ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। ২১-এর বিধানসভায়ও এখানে ১,০৮২টি ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে ডেউচা পঞ্চায়েতের ইভিএম-এর ফলে মাত্র ২৬টি ভোটে বিজেপির থেকে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। কিন্তু পোস্টাল ব্যালটে ৪৬টি ইডি ভোট পায় তৃণমূল। ফলে, ২০টি ভোটে এগিয়ে যায় তৃণমূল।
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি কালীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা আগে এই পঞ্চায়েতগুলিতে ২০১৯-এর লোকসভা, ২০২১-এর বিধানসভা ও ২০২৩-এর পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির থেকে পিছিয়ে ছিলাম। এ বার ডেউচা-পাঁচামি প্রকল্পের জন্য এই প্রথম পাঁচামি এলাকার প্রতিটি বুথে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে। এলাকার মানুষ তাঁদের ভোটের মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়েছে তাঁরা এই প্রকল্পে কতটা
খুশি।’’
অন্য দিকে, বিজেপির স্থানীয় বি-মণ্ডল সভাপতি পিণাকী মণ্ডল বলেন, ‘‘এটা তৃণমূলের ভুল ধারণা। আমরাও এই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি বুথে এগিয়ে রয়েছি।’’ পাশাপাশি, মহাসভার আহ্বায়ক জগন্নাথ টুডু বলেন, ‘‘ভোটের ফল যাই হোক না কেন, এই এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা শিল্পের
বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। আগামী দিনেও করব।’’