ফিতে কাটার আগে। বড়জোড়া সুপারস্পেশালিটিতে বিধায়ক। নিজস্ব চিত্র।
দু’দিন আগে জেলায় প্রশাসনিক সভা থেকে বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটিতে ২৪ শয্যার ‘হাইব্রিড সিসিইউ’ ইউনিটের উদ্বোধন করে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সেই ‘সিসিইউ’ ইউনিটেরই ফের ফিতে কাটলেন বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক অলক মুখোপাধ্যায়। বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটির তরফে ওই কর্মসূচিকে সিসিইউ ইউনিটের ‘উদ্বোধন’ বলে উল্লেখ করা একটি আমন্ত্রণপত্র ‘ভাইরাল’ হয়েছে। গোটা ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অস্বস্তি দানা বেঁধেছে জেলার স্বাস্থ্য মহলেও। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক সভা থেকে বড়জোড়ার হাইব্রিড সিসিইউ ইউনিটের উদ্বোধন করেছেন। তার পরে ফের সেটির উদ্বোধনের প্রশ্নই আসে না। এমন হওয়ার কথাও নয়। কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি।” চেষ্টা করেও এ দিন ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি বড়জোড়া সুপারস্পেশালিটির সুপার শুভনারায়ণ প্রসাদের সঙ্গে।
বড়জোড়া সুপারস্পেশালিটির ‘সিসিইউ’ ইউনিটটি আগে ছিল ছয় শয্যার। সেটিই বর্ধিত হয়ে ২৪ শয্যার হয়েছে। এ দিন থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সেখানে রোগী ভর্তিও শুরু হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে দাবি। বাঁকুড়া জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ অর্চিতা বিদ বলেন, “পালস পোলিও টিকাকরণের কর্মসূচি ভেবে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানে লোকমুখে শুনি, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধন করা সিসিইউ ইউনিটের আজ ফের উদ্বোধন করতে চলেছেন বিধায়ক। এ কথা শুনেই অনুষ্ঠানে না গিয়ে ফিরে আসি।”
বড়জোড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কাজল পোড়েল বলেন, “আমন্ত্রণপত্রে উদ্বোধন কথাটি দেখেই চমকে উঠেছিলাম। এ দিন অনুষ্ঠানে গিয়ে বারবার বিধায়ককে বলি, ফিতে না কাটার জন্য। আমার কথা না শুনে তড়িঘড়ি উনি কাচি নিয়ে ফিতে কাটতে যান। আমি ফিতের এক দিকটা খুলেও দিয়েছিলাম। কিন্তু বিধায়কের নির্দেশে আর এক জন সেটি হাতে করেই টেনে ধরেছিলেন।”
এ দিন ওই কর্মসূচিতে বিধায়কের পাশে দেখা গিয়েছে বড়জোড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা বেলিয়াতোড় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান কালিদাস মুখোপাধ্যায়কেও। কালিদাস বলেন, “কোনও আমন্ত্রণপত্র পাইনি। বিধায়ক হাসপাতালে একটি অনুষ্ঠান হবে জানিয়ে আমাকে ডেকেছিলেন। সেখানে গিয়ে দেখি ফিতে কাটা হচ্ছে। খুবই অস্বস্তিতে পড়েছি।”
হাসপাতালের আমন্ত্রণপত্রে লেখা থাকলেও অনুষ্ঠানটিকে ‘উদ্বোধন কর্মসূচি’ বলে তবে মানতে নারাজ বিধায়ক অলক। তিনি বলেন, “এ সব অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উদ্বোধন করেছেন ওই সিসিইউ ইউনিটের। বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে প্রচার করার লক্ষ্যেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।”