Bangladesh Situation

পাকিস্তান থেকে আমদানি করতে ‘বাধ্য’ বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা! করাচি থেকে দ্বিতীয় জাহাজ চট্টগ্রামে

শেখ হাসিনার আমলে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে পণ্য আসত শ্রীলঙ্কা বা সিঙ্গাপুর হয়ে। সেটারও পরিমাণ ছিল খুব কম। এখন করাচির সঙ্গে সরাসরি জাহাজ যোগাযোগ তৈরি করেছে ইউনূস প্রশাসন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৮
Share:

শাহবাজ শরিফের (বাঁ দিকে) সঙ্গে মুহাম্মদ ইউনূসের (ডান দিকে) সাক্ষাতের পর দ্বিতীয় জাহাজ করাচি থেকে পৌঁছেছে চট্টগ্রামে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

ভারতকে নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন প্রতিনিধির হুঁশিয়ারি, বিতর্কিত মন্তব্যের মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করছে ঢাকা। চলতি সপ্তাহেই করাচি থেকে দ্বিতীয় পণ্যবাহী জাহাজ পৌঁছে গিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। এর আগে গত নভেম্বরে পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। সে দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এমভি ইউয়ান জ়িয়াং ফা ঝাং নামে একটি জাহাজ চট্টগ্রামে পৌঁছয় গত শনিবার। প্রচুর পরিমাণ পরিশোধিত চিনি এবং খনিজ পদার্থ ডলোমাইট রয়েছে জাহাজটিতে। এখন নাকি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানি করার জন্য জোর দিতে বলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, একরকম বাধ্য হয়েই তাঁরা পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানি করছেন।

Advertisement

‘ঢাকা ট্রিবিউন’, ‘ডেলি অবজার্ভারে’র মতো বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, করাচি থেকে দুবাই হয়ে মোট ৮১১টি কন্টেনার বোঝাই মালপত্র নিয়ে বাংলাদেশের বন্দরে পৌঁছেছে একটি জাহাজ। ‘প্রথম আলো’ একটি সূত্র উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, প্রায় সাত হাজার টন পরিশোধিত চিনি আমদানি হয়েছে পাকিস্তান থেকে। জাহাজে ১৭১টি কন্টেনারে রয়েছে ডলোমাইট। এ ছাড়া কাচ শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল রয়েছে। এসেছে কাপড়ের রোল, আলু, আখের গুড়, লোহার টুকরো, রেজিন ইত্যাদি।

শেখ হাসিনার আমলে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে পণ্য আসত শ্রীলঙ্কা বা সিঙ্গাপুর হয়ে। সেটারও পরিমাণ ছিল খুব কম। এখন করাচির সঙ্গে সরাসরি জাহাজ যোগাযোগ তৈরি করেছে ইউনূস প্রশাসন। ১০ দিনের মধ্যে করাচি থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছে যাচ্ছে পণ্য। বস্তুত, গত অগস্টে তাঁর সরকার পতনের পর বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। এর পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। তার মাথায় আনা হয় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ইউনূসকে। তিনি পাকিস্তানের সঙ্গে বৈদিশিক সম্পর্ক গড়তে জোর দেন।

Advertisement

সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস। ১৯৭১ সালের বেশ কিছু ইস্যু নিষ্পত্তি করার জন্য ইউনূস নাকি আবেদন করেছেন ইসলামাবাদকে। পাশাপাশি বাণিজ্য বৃদ্ধি, ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদারে দু’দেশই সম্মত হয় বলে খবর। কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক মজবুত করা নিয়ে আড়াআড়ি বিভক্ত বাংলাদেশের বণিক মহল। ইকনমিক টাইমসের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তান থেকে মালপত্র আমদানি করতে ‘বাধ্য’ হচ্ছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জাহাজ মন্ত্রকের তরফে ভারত-বাংলাদেশ ‘শিপিং চুক্তি’ পর্যালোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যার ফলে চট্টগ্রাম এবং মংলা বন্দরে ভারত প্রবেশাধিকার পেয়েছে।

বঙ্গোপসাগরে তৈরি চিটাগাং বন্দরটি ‘কৌশলগত’ ভাবে ব্যবহার করত বাংলাদেশ। হাসিনার আমলে ওই বন্দর দিয়ে বাণিজ্য করেছে ভারত। নজরদারিও ছিল কড়া। ২০০৪ সালে ১৫০০ বাক্স চিনা গোলাবারুদ বাজেয়াপ্ত হয়েছিল সেখানে। এখন পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যের সূত্র ধরে বিভিন্ন নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ভারত। এই বিষয়টির দিকে নজর রাখছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement