Gandhi Family Lunch

ব্যক্তিগত মুহূর্ত প্রকাশ্যে আনলেন গান্ধীরা! সনিয়ার পঞ্চাশ বছর আগের স্মৃতি তাজা হল কি?

সনিয়া রাজ্যসভার সাংসদ। লোকসভার সাংসদ রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কা। রবিবার দুপুরে দিল্লির এক রেস্তরাঁর টেবিলে তাই এক রকম শক্তিপুঞ্জই তৈরি হয়েছিল। ছেলে-মেয়ে ছাড়াও সনিয়ার সঙ্গী হয়েছিলেন জামাই রবার্ট বঢরা, বেয়ান মওরিন বঢরা এবং নাতনি মিরায়া বঢরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:৩২
Share:

দিল্লির কোয়ালিটি রেস্তরাঁয় সপরিবার সনিয়া গান্ধী। ছবি : ইনস্টাগ্রাম।

রাজনীতির স্বার্থে তাঁদের জীবনের অনেকটাই জনতার দরবারে রাখা থাকে। পারিবারিক ঐতিহ্যের দৌলতেই গান্ধী পরিবারের সদস্যেরা চাইলেও আড়ালে থাকতে পারেন না। তবু তাঁদের অতি ব্যক্তিগত পরিবারিক মুহূর্তগুলি আড়ালেই থেকেছে এত দিন। যেমন গান্ধীদের কবে সপরিবার খাওয়াদাওয়া করতে দেখা গিয়েছে বা তার ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তা ঝট করে মনে পড়ে না। বহু বছর আগে তোলা এক ছবিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে খাবার পরিবেশন করতে দেখা গিয়েছিল কন্যা ইন্দিরাকে। তবে প্রকাশ্যে নয়, বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে। বছর পঞ্চাশ আগে সদ্যবিবাহিত রাজীব গান্ধী এবং সনিয়া গান্ধীকে ইন্ডিয়া গেটের সামনে কোয়ালিটি আইসক্রিম খেতে দেখা গিয়েছিল। আর রবিবার সনিয়াকে দেখা গেল দিল্লির কনট প্লেসের এক ‘ফাইন ডাইনিং’ রেস্তরাঁয় বসে পুত্র রাহুল গান্ধী এবং কন্যা প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারতে। আর কী অদ্ভুত সমাপতন— রেস্তরাঁর নাম ‘কোয়ালিটি’ আর ছবিতে সনিয়াকেও দেখা গেল আইসক্রিমই খেতেই!

Advertisement

ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

সনিয়া রাজ্যসভার সাংসদ। লোকসভার সাংসদ রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কা। রবিবার দুপুরে দিল্লির ওই রেস্তরাঁর টেবিলে তাই এক রকম শক্তিপুঞ্জই তৈরি হয়েছিল। ছেলে-মেয়ে ছাড়াও সনিয়ার সঙ্গী হয়েছিলেন জামাই রবার্ট বঢরা, বেয়ান মওরিন বঢরা এবং নাতনি মিরায়া বঢরা। চাইলে একান্ত পারিবারিক মুহূর্ত আড়ালেই রাখতে পারতেন তাঁরা। কিন্তু রাহুল নিজেই তাঁদের মধ্যাহ্নভোজের ছবি দিয়েছেন তাঁর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘‘বৈগ্রহিক কোয়ালিটি রেস্তরাঁয় পরিবারের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ। আপনারা এলে, এখানকার ছোলে-ভাটুরেটা খেয়ে দেখতে পারেন।’’ ছবিতেও দেখা যাচ্ছে, প্রমাণ মাপের ফুটবলের আকারের ভাটুরে। একটি সনিয়ার সামনে। অন্যটি রবার্ট ধরেছেন কন্যা মিরায়া এবং স্ত্রী প্রিয়ঙ্কার সামনে। বোঝাই যাচ্ছে, দিল্লর জনপ্রিয় খাবার ছোলে ভাটুরেই গান্ধী পরিবারের মধ্যাহ্নভোজের টেবিলের ‘স্টার’। তবে তা ছাড়াও মেনুতে ছিল নান, আমিষ পদ, পালং পনির এবং ডালও। ছবিতে সেই সব পদ পরিষ্কার দেখাও যাচ্ছে। একটি ছবিতে চেরি দেওয়া সানডে আইসক্রিম খেতে দেখা যাচ্ছে সনিয়াকেও।

ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

বছর পঞ্চাশ আগে সনিয়া আর রাজীবের আইসক্রিম খাওয়ার ছবি প্রসঙ্গে একটি গল্প শুনিয়েছিলেন সে ছবির আলোকচিত্রী। এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘ইটালির মেয়ে সনিয়াকে তখন সদ্য বিয়ে করেছেন রাজীব। তাঁদের ঘিরে কৌতূহলের অন্ত নেই। প্রকাশ্যে দেখা গেলেই ঝাঁপিয়ে পড়ছেন ছবিশিকারিরা। রাজীব বিষয়টা পছন্দ করছিলেন না। এক বার এক চিত্রসাংবাদিক তাঁর আর সনিয়ার ছবি তুলতে গেলে রাজীব তাঁর কাছ থেকে ক্যামেরা কেড়ে নেন। রাজীব বলেছিলেন, 'এ রকম লাফালাফি করে আড়াল-আবডাল থেকে ছবি তোলেন কেন ওঁরা? জিজ্ঞাসা করলেই তো পারেন!’ শুনে আমি বলেছিলাম, ‘আমি জিজ্ঞাসা করছি, আপনাদের উপর কি একটা স্টোরি করতে পারি?’ রাজীব রাজি হয়েছিলেন। তার পরেই ওই ছবি।’’ বলদেব নামে সেই আলোকচিত্রী জানিয়েছেন, শুটিংয়ের দিন ইন্ডিয়া গেটের সামনে আইসক্রিমের গাড়ি দেখে তিনিই রাজীবদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তাঁরা কি আইসক্রিম খেতে চান? রাজীব-সনিয়া রাজি হন। আইসক্রিমও খান। তবে বলদেব বলছেন, ‘‘গোটা সময়টাই সনিয়া বড্ড লাজুক ছিলেন।’’ রবিবারের পারিবারিক মধ্যাহ্নভোজেও সনিয়াকে কিছুটা তেমনই দেখাল।

Advertisement

ছবি: সংগৃহীত।

কনট প্লেসের কোয়ালিটি রেস্তরাঁ দিল্লির সবচেয়ে পুরনো ফাইন ডাইনিং রেস্তরাঁগুলির অন্যতম। কাঠের প্যানেল ঘেরা দেওয়াল। তার উপর ফ্রেমে বাঁধানো পুরনো দিল্লির ছবি। রঙিন কাচের জানলা, চামড়ার গদি আঁটা নকশাদার কাঠের চেয়ার, পুরনো কেতার টেবিল ল্যাম্প— সব মিলিয়ে দিল্লির ঠান্ডা থেকে কিছুটা ব্যক্তিগত পারিবারিক মুহূর্ত সরিয়ে নেওয়ার নিখুঁত পরিবেশ। ব্যক্তিগত মুহূর্তকে আড়ালে রাখা গান্ধী পরিবারের চেনা ছক ভেঙে রাহুলেরা যে ওই মুহূর্ত উপভোগ করেছেন, তা তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে স্পষ্ট। তবে সনিয়ার সামনে দিয়ে বিশাল মাপের বাটুরে নিয়ে যাওয়া হলেও ছবিতে দেখা গেল তাঁর প্লেট ফাঁকা। শুধুই কাচের গ্লাস থেকে চামচে করে আইসক্রিম মুখে তুলছেন তিনি।

তবে হঠাৎ কেন রবিবার সপরিবারে মধ্যাহ্নভোজ সারতে বেরোলেন গান্ধীরা। রাহুল অনুরাগীদের একাংশ বলছেন, এটা রাহুলদের পারিবারিক ঐতিহ্যও হতে পারে। যে হেতু সনিয়া জন্মসূত্রে খ্রিস্টান এবং বিদেশে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বড়দিনের আগের রবিবার সপরিবার মধ্যাহ্নভোজ করার রেওয়াজ রয়েছে, হয়তো তাই ২২ ডিসেম্বর, রবিবার সেই বিশেষ মধ্যাহ্নভোজ সারতে বেরিয়েছিলেন গান্ধীরা। তফাত এটুকুই, এর আগে এমন পারিবারিক ছবি তাঁরা কখনও প্রকাশ্যে আনেননি। এ বার আনলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement