ভিডিয়োর অংশ।
দলীয় মন্ত্রীদের গাড়িতে লালবাতি-নীলবাতির নিষেধাজ্ঞার কথা সম্প্রতি মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার মধ্যে তাঁদের পাইলট-কার নিতেও বারণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দলের নেতা-কর্মীদেরও নিয়ম-কানুন মেনে চলতে বারবার বলেন তিনি। কিন্তু তৃণমূলেরই বাঁকুড়ার জয়পুর ব্লক সভাপতিকে হেলমেটহীন অবস্থায় নম্বরহীন মোটরবাইকে যেতে দেখে পুলিশ আটকালে তাঁকে হম্বিতম্বি করতে দেখা গেল একটি ভিডিয়োয় (সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি)। বুধবার জয়পুর বাজার এলাকার ঘটনা।
জয়পুর ব্লক সভাপতি ইয়ামিন শেখের দাবি, ‘‘ওঁরা জয়পুর থানার পুলিশ নয়। ট্রাফিক পুলিশ বলে আমাকে প্রথমে চিনতে পারেনি। কাছাকাছি যাচ্ছিলাম বলে হেলমেট পরা হয়নি।’’ তবে তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “নিয়মভঙ্গ করলে আমরা সবাই সমান। আইন সবাইকে মানতে হবে।’’ বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, “বিষয়টি আমার কানেও এসেছে। খোঁজখবর নিচ্ছি। প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রাজ্যের যে সব এলাকা দুর্ঘটনাপ্রবণ সেখানে ট্রাফিক আইন মানা হচ্ছে কি না, তা দেখতে সম্প্রতি নজরদারিতে কড়াকড়ি করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন জয়পুর-কোতুলপুর ২ নম্বর রাজ্য সড়কে ট্রাফিক পুলিশের অভিযান চলছিল। সে সময়ে সেখান দিয়ে একটি মোটরবাইকের পিছনে চেপে যাচ্ছিল তৃণমূলের জয়পুর ব্লক সভাপতি ইয়ামিন। চালক ও ইয়ামিন দু’জনের মাথায় হেলমেট নেই দেখে ট্রাফিক পুলিশ কর্মীরা তাঁদের গাড়ি থামাতে বলেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় (সত্যতা যাচাই করে নি আনন্দবাজার) ইয়ামিনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এ দোকান থেকে ও দোকানে যাব, এ ঘর থেকে ও ঘরে যাব, হেলমেট পরতে হবে নাকি? লোকাল এলাকায় কেন গাড়ি ধরবেন? বর্ডারে যান।’’ এক ট্রাফিক পুলিশ জানান, লোকাল নয়, এটা স্টেট হাইওয়ে। তারপর তাঁকে বাইকটি রাস্তার পাশে আনতে বলা হলে, ইয়ামিনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘গাড়ি দিয়ে আসতে হবে।’’
পাশ থেকে এক জনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘অ্যারেস্ট করে ওনাকে ঢুকিয়ে দিন না, বেকার তর্ক করছেন।’’ তারপরেই চটে গিয়ে ইয়ামিনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘খুব মুরোদ! অ্যারেস্ট করবে?’’ তারপরেই একটু সরে গিয়ে কাউকে ফোন করে ঘটনাটি জানান তিনি।
সেখানে থাকা এক ট্রাফিক পুলিশ কর্মী বলেন, “দুর্ঘটনা এড়াতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই রাজ্য সড়কের বিভিন্ন জায়াগায় হেলমেটবিহীন চালকদের গাড়ি আটক করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মোটরবাইকের গতি নিয়ন্ত্রণ নিয়েও সচেতন করা হচ্ছে। তাঁদের হেলমেট ছিল না।” আইনি ব্যবস্থা কি নিয়েছেন? তাঁর দাবি, ‘‘বাইকের কোন নম্বর ছিল না।” নম্বরবিহীন গাড়িকে কেন ছেড়ে দেওয়া হল? তিনি আর জবাব দেননি।
বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিল্লেশ্বর সিংহের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূল কবে আইন মেনেছে? সাধারণ মানুষ ভুল করলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে তৃণমূল নেতা হওয়ায় সব ছাড়?’’ যদিও ইয়ামিনের দাবি, “সে রকম কিছুই হয় নি। সব ঠিক হয়ে গিয়েছে। গাড়িটি আমার নয়। বাজার এলাকায় ট্রাফিকের ধরপাকড়ের জন্য সাধারণ মানুষের অসুবিধা হচ্ছিল। তাই তাঁদের বাজার ছাড়িয়ে ফাঁকা জায়গায় গাড়ি ধরপাকড় করতে বলি।”