প্রতীকী ছবি।
ঝালদা পুরসভায় পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা সংক্রান্ত তলবিসভা ডাকা হল না বুধবারও। তবে তৃণমূলের বর্তমান পুরপ্রধান ও প্রাক্তন পুরপ্রধানের পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ থেমে নেই।
ঝালদার বর্তমান পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগের তুলে এ বার ইডি ও সিবিআই তদন্তের দাবি তুললেন পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের অন্যতম সম্পাদক তথা ঝালদার প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার। তৃণমূল নেতৃত্ব যখন বার বার কেন্দ্রীয় ওই দুই তদন্ত সংস্থার বিরুদ্ধে নানা প্রশ্ন তুলছে, সে সময় দলেরই এক নেতার এমন দাবিতে শুধু ঝালদা নয়, শোরগোল পড়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলেও।
মঙ্গলবার ঝালদা পুরভবন চত্বরে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে প্রদীপ দাবি করেন, ‘‘সুরেশের আমলে গত ছ’মাসে যে সীমাহীন আর্থিক বেনিয়ম হয়েছে, তাতে ইডি কিংবা সিবিআইয়ের মতো সংস্থাই পারে যথাযথ তদন্ত করতে।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘পুরসভায় শুধু কাটমানির খেলা চলছে। কিছু নেতা পুরপ্রধানের সঙ্গে ‘মান্থলি’তে বাঁধা।’’
যদিও সুরেশের দাবি, ‘‘পুরভোটে মানুষ যাঁকে (প্রদীপ) প্রত্যাখ্যান করেছেন, তাঁর এই সমস্ত কথাবার্তার কোনও ভিত্তি নেই। আমিও চাই তদন্ত হোক। তবে হলে শুধু গত ছ’মাসের কেন? তাঁর (প্রদীপ) আমলে যে সমস্ত বেনিয়ম হয়েছে, সেটাও তদন্ত করে দেখা দরকার।’’
এ নিয়ে বিরোধীরা সুর চড়িয়েছেন। পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর কটাক্ষ, ‘‘ফাঁকা আওয়াজ তুলে লাভ নেই। প্রদীপ যদি ওই অভিযোগ নিয়ে আইনের দ্বারস্থ হন, কংগ্রেস তাঁর পাশে থাকবে।’’ বিজেপির ঝালদা শহর সভাপতি বিজয় ভগতের দাবি, ‘‘তৃণমূল এবং তাদের পরিচালিত ঝালদা পুরসভা যে আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ডুবে গিয়েছে, সে কথা আমরা দীর্ঘদিন বলে আসছি। এখন তাদের নেতারাই তা স্বীকার করছেন। মানুষই এর বিচার করুক।’’
সে সব প্রসঙ্গে সরাসরি মন্তব্য না করে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘আগেই বলেছি এ ভাবে বাইরে না বলে তাঁর (প্রদীপ) কিছু বলার থাকলে দলের কাছে জানাতে পারেন। দল সব কিছুর উপরেই নজর রাখছে। তাঁকে সতর্ক করা হবে।’’
এ দিকে নিয়ম অনুযায়ী উপপুরপ্রধানের তলবিসভা ডাকার মেয়াদ আজ বৃহস্পতিবার শেষ হয়ে যাচ্ছে। তিনি তলবিসভা ডাকবেন, নাকি পুরপ্রধানের মতো এড়িয়ে যাবেন, এ নিয়ে জল্পনার শেষ নেই সাধারণ মানুষজনের মধ্যে।
অনাস্থা প্রস্তাবে সই থাকা কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা নিহত তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। তাঁর কথায়, ‘‘পুরপ্রধানের তলবিসভা ডাকা উচিত ছিল। সেটা তিনি করেননি। অবিলম্বে উপপুরপ্রধানকে তলবিসভাডাকতে বলছি।’’