তৃণমূল নেতা কাজল শেখ। —ফাইল চিত্র।
অনুব্রত মণ্ডল জেলে। কিন্তু, তাঁর ‘খেলা হবে’ স্লোগান পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে শোনা গেল তৃণমূল নেতা কাজল শেখের মুখে। বিরোধীদের উদ্দেশে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য এবং জেলা পরিষদের প্রার্থী কাজল শেখের হুঁশিয়ারি, ‘‘‘যাঁরা রাতের অন্ধকারে প্রচারের নামে আদিবাসী, অনুন্নত সম্প্রদায়ের মানুষজনকে টাকা দিয়ে, মদ খাইয়ে ভুল বোঝাতে আসবেন, তাঁদের দেখে নেওয়া হবে! তখন খেলাও হবে!’’ কী ‘খেলা হবে’, তা অবশ্য কাজল খোলসা করেননি।
শুক্রবার নানুরের বাসাপাড়ায় নিজের নির্বাচনী সভায় কথাগুলি বলেন তিনি। ওই সভায় অন্যান্যদের মধ্যে হাজির ছিলেন মন্ত্রী শশী পাঁজা, সাংসদ অসিত মাল, কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজ, নানুরে বিধায়ক বিধানচন্দ্র মাঝি প্রমুখ। এ দিনের প্রচারেও অনুব্রত অনুগামী হিসেবে পরিচিত জেলা পরিষদের বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খানকে দেখা যায়নি। কেরিমের নাম না নিলেও কাজল বলেন, ‘‘যাঁরা প্রকৃত তৃণমূল কর্মী, তাঁরা সবাই প্রচারে নেমেছেন।’’ কেরিম কি তা হলে তৃণমূল কর্মী নন? কাজল উত্তর দেননি।
এ দিন মঞ্চ থেকে শশী পাঁজা বিজেপিকে পরোক্ষে ‘ঘেউ’ পার্টি বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘কখনও মনোনয়নপত্র জমা, কখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী, আবার কখনও নির্বাচনের দফা বাড়ানোর দাবিতে ওরা ঘেউ ঘেউ করে চলেছে।’’ তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষকে কেন্দ্রীয় সংস্থার তলবের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। কিন্তু এটা রাজনৈতিক আক্রোশ ছাড়া কিছু নয়। অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে শাসক দলের পিছনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কারণে সিবিআই-ইডিকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (বোলপুর) সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতা, নেত্রীদের এখন দুর্নীতির দায়ে জেলে যাওয়ার আশঙ্কায় মাথার ঘায়ে কুকুর পাগলের মতো অবস্থা। তাই সবেতেই অন্যকে ঘেউ ঘেউ করতে শুনছেন।’’
এ দিনই বিকেলে কীর্ণাহারে নির্বাচনী সভায় কাজল বিরোধীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘২০১১ সালে জেতার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বদলা নয় বদল চাই। তাই তোমরা এখনও কীর্ণাহারে মাটিতে আছো। না হলে হয় মাটিতে মিশে যেতে, না হলে আকাশে উড়ে যেতে। সে বিষয়ে সময় কথা বলবে।’’ বিরোধীদের ‘অলিখিত’ জোটের দিকে ইঙ্গিত করে তাঁর দাবি, কীর্ণাহারে সিপিএম প্রার্থী দিয়েছে। কিন্তু বিজেপি দেয়নি। পাশের দাসকলগ্রাম কড়েয়া ১ পঞ্চায়েতে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে কিন্তু সিপিএম-কংগ্রেস দেয়নি। ‘‘জগাই-মাধাই-গদাইয়ের মধ্যে বোঝাপড়া আছে বুঝে নিন।’’—কটাক্ষ কাজলের।