CM Mamata Banerjee

‘অহঙ্কার, আত্মপ্রদর্শনের নমুনা সরান’! বিশ্বভারতীর ফলক-বিতর্কে কেন্দ্রকে ‘পরামর্শ’ মুখ্যমন্ত্রী মমতার

তৃণমূল যখন শান্তিনিকেতনে ধর্না কর্মসূচি পালন করছে, তখন শনিবার সন্ধ্যায় এক্স হ্যান্ডলে বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। কেন্দ্রকে ফলক সরানোর পরামর্শ দেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৩ ২০:০১
Share:

ফলক-বিতর্কে কেন্দ্রকে পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

বিশ্বভারতীর বিতর্কিত ফলক সরিয়ে নেওয়ার জন্য এ বার কেন্দ্রীয় সরকারকে ‘পরামর্শ’ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বার্তা মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন নিজের এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার)। সেখানে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান কর্তৃপক্ষকে কটাক্ষের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এই ফলককে ‘অহংকারী, আত্ম-প্রদর্শনবাদের নিদর্শন’ হিসাবে অভিহিত করে কেন্দ্রকে তা সরানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

Advertisement

শনিবার সন্ধ্যায় নিজের এক্স হ্যান্ডলে মমতা পোস্ট করেন। সেখানে লেখেন, ‘‘গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে যে বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্র— বিশ্বভারতীকে তৈরি করেছিলেন বর্তমানে তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। কিন্তু বর্তমান কর্তৃপক্ষ সেই স্থানের স্মারক হিসাবে যে ফলকটি বসিয়েছেন, তাতে উপাচার্যেরও নাম রয়েছে, বাদ কেবল গুরুদেবের নাম!’’ মুখ্যমন্ত্রীর মতে এটি রবীন্দ্রনাথের অপমান। বার্তার শেষ দিকে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারকে পরামর্শ দিয়ে লিখেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারকে পরামর্শ, এই অহংকারী, আত্মপ্রদর্শনবাদের নমুনাটিকে সরিয়ে দেওয়া হোক এবং গুরুদেবকে যাতে তাঁর প্রাপ্য সম্মান দেশ জানাতে পারে, তার ব্যবস্থা হোক।’’

প্রসঙ্গত, গত ২৭ সেপ্টেম্বর শান্তিনিকেতনকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো। তার পর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ঐতিহ্যবাহী উপাসনা গৃহ, রবীন্দ্র ভবন ও গৌড় প্রাঙ্গনে তিনটি শ্বেত পাথরের ফলক বসায়। তাতে লেখা, ইউনেসকোর স্বীকৃতি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। নীচে দু’টি নাম দেওয়া হয়েছে, একটি নাম আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এবং দ্বিতীয়টি উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। কোথাও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামের চিহ্নও নেই। এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায়। রাজ্যপালও জবাবদিহি তলব করেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে। কড়া প্রতিক্রিয়া দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁরই নির্দেশে শান্তিনিকেতনে চলছে রবীন্দ্রনাথের ছবি বুকে নিয়ে তৃণমূলের ধর্না কর্মসূচি।

Advertisement

কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন শনিবার। ধর্নায় হাজির ছিলেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ অসিত মাল ছাড়া আরও অনেকে। তাঁরা একযোগে বিশ্বভারতীর বর্তমান উপাচার্যের সমালোচনায় সরব হন। আশিস বলেন, ‘‘এটা আমাদের প্রতিবাদ। বিশ্বভারতীর অন্দরে রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিয়ে কিছু হয় নাকি! তাঁরই তো সৃষ্টি। উপাচার্য বিতর্ক ভালবাসেন, বিতর্কিতই থাকতে চান। তাই এ সব করছেন। আমরা সম্মিলিত ভাবে তারই প্রতিবাদে সামিল হয়েছি।’’ সাংসদ অসিত বলেন, ‘‘উনি যা করছেন তাতে রবীন্দ্র ভক্তদের ভাবাবেগ আহত হচ্ছে। সম্প্রতি ফলক নিয়ে যে ঘটনা তিনি ঘটিয়েছেন তাকে লজ্জাজনক বললেও কম বলা হয়। মুখ্যমন্ত্রী প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বার বার বলছেন, এটা রবীন্দ্রনাথের অপমান। আমাদেরও একই বক্তব্য। এই নোংরামি বন্ধ হোক। আমরা বলতে চাই, আপনি যে অন্যায় করছেন, তা ক্ষমার অযোগ্য।’’

একই দিনে বোলপুরে তৃণমূলের প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে স্থানীয় নেতা গদাধর হাজরার হুঁশিয়ারি, মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিলে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে বীরভূম ছাড়া করতে তাঁর পাঁচ মিনিটও লাগবে না। উপাচার্য বিদ্যুৎকে তীব্র আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা তৃণমূল কংগ্রেস করি। আমরা ইচ্ছে করলে, আপনি যেখানে বাস করছেন সেখান থেকে আপনাকে বার করতে আমাদের পাঁচ মিনিট লাগবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন ধর্না করতে। তাই আন্দোলন করছি। নেত্রী যদি একবার নির্দেশ দেন, আপনি যে ঘরে বাস করছেন, সেখান থেকে টেনে বার করে বোলপুর থেকে বার করতে আমাদের বেশি সময় লাগবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement