হাসপাতালের বাইরে গাড়িতে অনুব্রত, সেই অবস্থাতেই চলছে ডাক্তারি পরীক্ষা। — নিজস্ব ছবি।
বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে মঙ্গলবার হাজির করানো হয়েছিল দুবরাজপুরের আদালতে। সেখানে তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। কিন্তু মঙ্গলবার অনুব্রত আদালতে পৌঁছনোর আগেই জড়িয়ে পড়লেন নতুন বিতর্কে। হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য নিয়মমাফিক তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অন্য বিচারাধীন বন্দিদের হাসপাতাল চত্বরে গাড়ি থেকে নামিয়ে ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অনুব্রত বসেছিলেন গাড়িতেই। চিকিৎসকেরা সেখানে এসে তাঁকে পরীক্ষা করেন। এই বাড়তি সুবিধার কারণ কী? প্রশ্ন তুলেছেন হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের পরিবারের কেউ কেউ।
দুপুর ২টো ২০। দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ঢোকে পুলিশের গাড়ি। সেই গাড়ির চালকের ঠিক পিছনের আসনে বসে অনুব্রত। গাড়ি হাসপাতালে পৌঁছতেই খুলে যায় দরজা। ছুটে আসেন চিকিৎসকেরা। গাড়ি বসে থাকেন অনুব্রত, তাঁকে পরীক্ষানিরীক্ষা করেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী তো অনুব্রতকে গাড়ি থেকে নামিয়ে হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার কথা! তার পর রোগী দেখার নির্দিষ্ট জায়গায় তাঁকে দেখবেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু অনুব্রতের ক্ষেত্রে সেই নিয়মেই ব্যতিক্রম ঘটল। তাঁর নাম অনুব্রত বলেই এই বাড়তি সুবিধা দেওয়া হল তাঁকে? মিনিট কুড়ি ধরে অনুব্রতকে পরীক্ষানিরীক্ষা করার পর অনুব্রতের গাড়ির দরজা বন্ধ হয়। তাঁকে নিয়ে পুলিশ রওনা দেয় দুবরাজপুরের আদালতের উদ্দেশে।
সেই সময় হাসপাতালে উপস্থিত এক রোগীর পরিজনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘অনুব্রত বলেই কি এই বাড়তি সুবিধা দিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ?’’ তাঁর প্রশ্ন, তাঁদের ক্ষেত্রেও কি একই সুবিধা পাওয়া যাবে? এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হাসপাতালের পদাধিকারীদের কোনও জবাব এসে পৌঁছয়নি।
বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি যে কতটা প্রভাবশালী, তা নিয়ে আগে আদালতে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে ইডি বা সিবিআইয়ের আইনজীবীদের। আইন মহলের একটি অংশের মত, অনুব্রতের প্রভাবের কারণেই তাঁর জামিন আরও বিলম্বিত হচ্ছে। এ বার সেই তকমাই তাঁকে নতুন বিতর্কে জড়িয়ে ফেলল।