আহত উত্তম ধুয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। — নিজস্ব চিত্র।
আবার প্রকাশ্যে বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। অভিযোগ, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় দলের পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্যার বাড়িতে হামলা চালিয়ে সদস্যার স্বামীকে বেধড়ক মারধর করেন তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি ধ্রুবতারা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা।
বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকে দীর্ঘ দিন তৃণমূল সভাপতি পদে ছিলেন ধ্রুবতারা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ধ্রুবতারাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে তাঁকে তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি করা হয়। ব্লক সভাপতি পদে বসানো হয় বিধান সিংহকে। সূত্রের খবর, এই রদবদলের পর থেকেই ধ্রুবতারার সঙ্গে বিধানের ঠান্ডা লড়াইয়ের শুরু।
গত পঞ্চায়েতে বাঁকুড়া ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতিতে নির্বাচিত হন মানকানালির বাসিন্দা সোনালি ধুয়া। সোনালি এবং তাঁর স্বামী উত্তম দলে বিধানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। অভিযোগ, বিধানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই শুক্রবার সন্ধ্যায় সোনালির মানাকানালির বাড়িতে হামলা চালান ধ্রুবতারা। বাড়িতে ঢুকে উত্তমকে বেধড়ক মারধর করা হয়। স্বামীকে মারধরে বাধা দিলে স্ত্রী সোনালিকেও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। আহত উত্তমকে প্রথমে কাঞ্চনপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং পরে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়।
আহত উত্তম বলেন, ‘‘বিনা প্ররোচনায় আমাকে মারধর করেছেন ধ্রুবতারা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমার স্ত্রীকেও হেনস্থা করা হয়েছে। দলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। আমরা বিষয়টি দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি।’’ সোনালি বলেন, ‘‘যে ভাবে দলের নেতা ধ্রুবতারা হামলা চালিয়েছেন, তাতে আমরা বাকরুদ্ধ! স্বামীকে বেধড়ক মারধরের পাশাপাশি আমাকেও যথেচ্ছ গালিগালাজ ও হেনস্থা করেছেন ধ্রুবতারা। নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় বিষয়টি বাঁকুড়া সদর থানায় জানিয়েছি।’’ তৃণমূলের বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি বিধান বলেন, ‘‘জেলা নেতা দলেরই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যার বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাঁর স্বামীকে মারধর করছেন, এই অভিযোগ খুবই অস্বস্তিকর। বিষয়টি দলীয় নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দেখা হবে।’’ অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা ধ্রুবতারা অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলছেন, ‘‘অভিযোগ সম্পুর্ণ মিথ্যা। আমি সংবাদমাধ্যমের কাছে শুনলাম এমন অভিযোগ উঠেছে। সোনালি ধুয়া আমার দিদির মতো। তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি। তিনি শিক্ষিত ও অত্যন্ত মার্জিত। কেন এমন মিথ্যা অভিযোগ করলেন, বুঝতে পারছি না। আমি তাঁর সঙ্গে অবশ্যই এ নিয়ে ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলব।’’