প্রকাশ্যে এল জেলায় দলের গোষ্ঠী কোন্দল। ফাইল চিত্র।
জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল। পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলায় দলের কর্মী-সমর্থকদের মনোবল চাঙ্গা করতে বীরভূমে গিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। জেলা সভাপতি অনুব্রতকে ‘বাঘ’ আখ্যা দিয়ে বার্তাও দিয়েছেন বিরোধীদের। আর সেই দিনেই প্রকাশ্যে এল জেলায় দলের গোষ্ঠী কোন্দল।
বালিঘাটের দখলদারি নিয়ে বিবাদের জেরে তৃণমূলের এক কর্মীকে ভোজালি দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে বাঁশজোড় গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের নাম ফয়জল শেখ। গ্রামের পুকুরপাড় থেকে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হওয়ার পর সিউড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়েছে সিউড়ি থানার পুলিশ। যান জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারাও।
দলের একাংশের দাবি, তৃণমূল নেতা কাজল শাহ এবং আতাই শাহের গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের জেরেই ওই যুবকের প্রাণ গিয়েছে। গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের অভিযোগ স্বীকার করেছেন আতাইও। তাঁর দাবি, ‘‘বালিঘাটের দখলদারি নিয়ে অনেক দিন ধরেই বিবাদ চলছিল। সেই বিবাদ এখন মিটেও গিয়েছে। ফয়জলকে বেশ কিছু দিন ধরে নিজেদের দলে টানার চেষ্টা করছিলেন কাজলের গোষ্ঠীর লোকজন। ফয়জল যেতে না চাওয়ায় ওঁকে খুন করা হল। ৮-১০ জন মিলে ভোজালি দিয়ে কুপিয়ে খুন করেছে।’’ এ ব্যাপারে অবশ্য কাজলের কোনও বক্তব্য জানা যায়নি।
ঘটনাচক্রে, শনিবারই বীরভূমের হাসন বিধানসভার বিষ্ণুপুরে সভা করেছেন ফিরহাদ। বিরোধীদের বিরুদ্ধে তোপ দেখে তিনি বলেছেন, ‘‘বনের বাঘ এক দিক থেকে অন্য দিকে চলে গেলে শেয়ালরা মাঝেমাঝে লাফালাফি করে। আবার যেই বাঘ আসে তখন শেয়ালগুলি লেজ নাড়িয়ে পালিয়ে যায়।’’
জেলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে মুখ না খুললেও পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘জেলা নেতৃত্বের উপর ভরসা আছে। আমরা মাঝে মাঝে আসি শুধুমাত্র কথা বলতে। আগেও যখন সভাপতি ছিলেন তখনও আসতাম। এখনও আসছি।’’ দলের একাংশের বক্তব্য, ফিরহাদের জেলা সফরের দিনে গোষ্ঠী বিবাদ প্রকাশ্যে আসায় রাজ্য নেতৃত্বেরও অস্বস্তিতে পড়ার কথা।
(এই খবরটি প্রথম প্রকাশের সময় অনবধানতা বশত কাজল শাহের জায়গায় কাজল শেখের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল এবং তাঁর ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই তথ্যটি ঠিক ছিল না। বিষয়টি গোচরে আসার পরেই আনন্দবাজার অনলাইন তা সংশোধন করেছে। এই অনিচ্ছাকৃত এবং সাময়িক ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক দুঃখিত। কাজল শেখ এবং সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে নিঃশর্তে ক্ষমাপ্রার্থী।)