প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা ভোটে সাফল্য পেতে আদিবাসী ভোটেই নজর তৃণমূল-বিজেপির। একদিকে আদিবাসীদের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক প্রকল্পের কথা প্রতিটি বিধানসভায় ট্যাবলোর মাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছে তৃণমূল। অন্য দিকে আদিবাসীদের দলে টানতে একাধিক কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি।
রাজনৈতিক দলগুলির তথ্য অনুসারে এই জেলায় দু’লক্ষেরও বেশি আদিবাসী ভোটার রয়েছেন। জেলায় সিউড়ি, সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর, রামপুরহাট এবং বোলপুর বিধানসভা এলাকায় আদিবাসীদের বসবাস বেশি। এর মধ্যে কেবল রামপুরহাট বিধানসভায় আদিবাসী ভোটার ৬০ হাজারের অধিক। স্বাভাবিকভাবেই বেশ কিছু বিধানসভায় আদিবাসী ভোট যে ভোটের ফলকে প্রভাবিত করবে তা মানছেন সব পক্ষের নেতারাই।
গত লোকসভা ভোটে জেলার দু’টি আসনে তৃণমূল জয় লাভ করলেও বীরভূম লোকসভার ক্ষেত্রে তৃণমূলের সঙ্গে কাঁটায় কাঁটায় টক্কর দিয়েছিল বিজেপি। লোকসভা ভোটে সিউড়ি, সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর এবং রামপুরহাট— এই চার বিধানসভায় তৃণমূল পিছিয়ে ছিল। এগিয়ে ছিল বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপির এই ভোট বৃদ্ধির একটি কারণ হল আদিবাসী ভোটের একটি বড় অংশের বিজেপির দিকে চলে যাওয়া। দু’দলের নেতাকর্মীরাই জানাচ্ছেন, বেশ কিছু এলাকায় আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ অনেক সরকারি পরিষেবা পাননি। তা নিয়ে ক্ষোভ ছিল। সেই ক্ষোভ কাজে লাগিয়েই আদিবাসীদের নিজেদের দিকে টানতে সক্ষম হয়েছিল বিজেপি। কিন্তু বিধানসভার আগে সেই ভোটকে ফিরিয়ে আনতে বিশেষ নজর দিয়েছে তৃণমূল।
তৃণমূল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই জেলার সমস্ত বিধানসভা এলাকায় ট্যাবলোর মাধ্যমে প্রচার চালানো হচ্ছে। তৃণমূল নেতাদের দাবি, ওই ট্যাবলোয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন থাকছেন। তাঁরা মানুষের কাছে তৃণমূল সরকারের নানান উন্নয়ন যেমন, জয় জোহার প্রকল্প, ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে রোজগারের উৎস প্রদান, বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের সহায়তা প্রদান করে তাদের উপার্জনের স্থায়ী উৎস তৈরি করে দেওয়ার মতো বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কথা বলছেন।
ময়দান ছাড়তে নারাজ বিজেপিও। ভোট ধরে রাখতে একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে তারা। যেমন, দিন কয়েক আগে যোগদান কর্মসূচির মাধ্যমে আদিবাসীদের নিয়ে একটি সম্মেলন করেছে বিজেপি। তাছাড়া তাঁরা পুজোর পর একাধিক কর্মসূচি নিয়েছেন বলে দাবি বিজেপি নেতাদের। জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলছেন, ‘‘বিজেপি ভোটের রাজনীতি করে না। আদিবাসী মানুষরা বিভিন্নভাবে বঞ্চিত হয়েছেন। তাই তাঁদের প্রাপ্য পাইয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে আমাদের লড়াই চলছে।’’
তৃণমূলের প্রচার যে আদিবাসীদের মন জয় করে তাঁদের ভোটকে ফিরিয়ে আনতে, তা মানতে চান নি তৃণমূলের নেতারা। দলের জেলা সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলছেন, ‘‘অনেক রকম বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চলছে। তাই মানুষকে সচেতন করা এবং তৃণমূল সরকারের উন্নয়নের কথা পৌঁছে দিতেই এই উদ্যোগ।’’