ক্লাসের সময়ে মাঠে খেলছে পড়ুয়ারা। মুরারই ১ ব্লকের তিওরপাড়া রাধারানি উচ্চ বিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র ।
স্কুলের পড়ুয়ার সংখ্যা ৩০০ জন। কিন্তু স্কুলের শিক্ষক বলতে এক জন পার্শ্বশিক্ষক। আছেন এক জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মীও। দিন কয়েক আগে স্কুলে গিয়ে দেখা গেল ক্লাসের সময়ে অধিকাংশ পড়ুয়াই মাঠে খেলা করছে। কারণ, তাদের পড়ানোর কোনও ব্যবস্থা নেই। এ ছবি মুরারই ১ ব্লকের তিওরপাড়া রাধারানি হাই স্কুলের।
স্কুল সূত্রে খবর, প্রায় দু’বছর ধরে স্কুলে কোনও স্থায়ী শিক্ষক নেই। অভিভাবকদের একাংশ জানান, মাধ্যমিক পরীক্ষার আগেও স্কুলে ক্লাস হয় না বললেই চলে। বেশ কয়েকটি গ্রামের পড়ুয়ারা এই স্কুলে পড়াশোনা করে। বাঁশলৈ নদীর ওপারে রয়েছে কাহিনগর উচ্চ বিদ্যালয়। বর্ষার সময়ে নদীতে জল থাকলে পড়ুয়ারা যেতে পারে না। আর একটি স্কুল চার কিলোমিটার দূরে। তাই এই স্কুলে পড়ুয়াদের ভর্তি করা হয়েছে।
অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক না থাকায় পড়াশোনা হয় না বললেই চলে। বিষয়টি তাঁরা শিক্ষা দফতরে বেশ কয়েক বার জানিয়েছেন। দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ না হলে আন্দোলন করার হুঁশিয়ারিও দেন তাঁরা। অভিভাবকেরা জানান, এই এলাকার অধিকাংশ পড়ুয়ারা দুঃস্থ পরিবারের। স্কুলের উপরেই পড়াশোনা নির্ভরশীল।
অভিভাবক নারায়ণ মণ্ডল, বৈদ্যনাথ মণ্ডেলরা বলেন, “বাধ্য হয়ে ছেলেকে ভর্তি করেছি। স্কুলে কোনও স্থায়ী শিক্ষক নেই। এক জন পার্শ্বশিক্ষক ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ক্লাস নেন। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির জন্য অনন্ত সাত জন শিক্ষকের প্রয়োজন আছে। এ ভাবে কোনও স্কুল চলতে পারে না। বহু পড়ুয়া বাধ্য হয়ে অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে। এ রকম ভাবে চলতে থাকলে কয়েক মাসের মধ্যে স্কুলে তালা ঝুলবে।” পার্শশিক্ষক দেবদুলাল সাহু বলেন, ‘‘স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক না থাকায় বাধ্য হয়ে দায়িত্ব নিতে হয়েছে। সিআই স্কুলের সমস্ত বিষয় দেখাশোনা করেন। স্থায়ী শিক্ষক না থাকায় সব ক্লাস হয় না বললেই চলে।
তবে নবম ও দশম শ্রেণির সব ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা করি।’’
মুরারই ১ ব্লকের শিক্ষা আধিকারিক (সিআই) সেলিম দফাদার বলেন, “বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ করা হবে স্কুলে। পাশের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে স্কুলে কিছু দিনের জন্য পড়ানোর কথা বলা হয়েছে। শিক্ষক না থাকায় পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়েছে।”