ইলামাবাজারের দ্বারন্দা গ্রামে ‘শীতলপাটি’ নাটকের একটি দৃশ্য। নিজস্ব চিত্র।
ইলামবাজারের দ্বারন্দায় তিন দিনের থিয়েটার উৎসব শেষ হল রবিবার। এই এলাকায় বছরের গুরুত্বপূর্ণ উৎসবগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। রাজ্যের নানা গোষ্ঠীর নতুন নতুন নাট্য প্রযোজনা, বিভিন্ন লোকগান, লোকনৃত্য ও হস্তশিল্প প্রদর্শনীর সমন্বয়ে এই তিন দিন জমজমাট ছিল দ্বারন্দার থিয়েটার কটেজ। দর্শকের উপস্থিতিও ছিল সন্তোষজনক।
প্রতি বছরই কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের অর্থানুকূল্যে এবং পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্র, কলকাতার সহযোগিতায় বীরভূম ব্লসম থিয়েটারের পক্ষ থেকে পার্থ গুপ্ত এই নাট্যোৎসব আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘থিয়েটার অ্যান্ড থিয়েটার’। শুক্রবার এই উৎসবের উদ্বোধন করেন পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্র, কলকাতার অধিকর্তা গৌরী বসু। উপস্থিত ছিলেন নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, সাহানা বাজপেয়ী প্রমুখরা।
এই উৎসবে থিয়েটার কটেজে তিনটি পৃথক মঞ্চ তৈরি করে সংস্কৃতির বিভিন্ন উজ্জ্বল দিকগুলিকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন আয়োজকরা। ভাদু, টুসু, মেদিনীপুরের বেণী পুতুল, পটের গান, প্রভাতী গান, বাউল, দাঁসাই নাচ, বাংলা ঢোল পরিবেশনের পাশাপাশি সাঁওতালি ভাষায় নাটকও পরিবেশিত হয়। বীরভূম ব্লসম থিয়েটার পরিবেশিত এই ‘আরাহ বাহা’ নাটকটি প্রকৃতপক্ষে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রক্তকরবী’ নাটকের অবলম্বনে রচিত সাঁওতালি নাটক। এ ছাড়াও বাংলা ভাষায় অনেকগুলি নাটক এবং ইংরেজিতে তথ্যচিত্রও পরিবেশিত হয়। হস্তশিল্প প্রদর্শনীতেও ছিল লোকসংস্কৃতির ছাপ।
বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার নিজস্ব হস্তশিল্প ফুটে উঠেছে এখানে। বিষ্ণুপুরের পোড়ামাটির কাজ ও বাঁকুড়ার ডোকরার কাজ বিশেষ কদর পেয়েছে এই স্থানে। উত্তরপ্রদেশ এবং ভোপাল থেকেও শিল্পীরা এসেছিলেন এখানে। শুধু
প্রদর্শনী নয়, সেই স্থানে বসে শিল্পসৃষ্টি ও বিক্রয়ের বন্দোবস্ত ছিল। আয়োজক পার্থ গুপ্ত বলেন, “প্রতিবছর উৎসব হয়। এ বার হবে কিনা বুঝতে পারছিলাম না। তার পরেও নির্বিঘ্নে আয়োজিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে কৃতজ্ঞ।”