বিক্ষোভ: দুর্ঘটনার পরে অবরোধ। নিজস্ব চিত্র
পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় এক পথচারীর মৃত্যুর অভিযোগকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল বোলপুরে। ঘটনার প্রতিবাদে উত্তেজিত জনতা দীর্ঘক্ষণ বোলপুর ইলামবাজার বাইপাস অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম শেখ সফিকুল ওরফে সফিক (৩৬)। বাড়ি কাশীপুর গ্রামে। জেলার পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ জানিয়েছেন, পুলিশ এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছে। ওই গাড়ির চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বেলা দশটা নাগাদ কাশীপুর থেকে রং কিনতে বোলপুর বাইপাস এলাকার একটি রঙের দোকানে এসেছিলেন সফিকুল। অভিযোগ, রং কিনে রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি পুলিশের গাড়ি সফিকুলকে সজোরে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা সফিকুলকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখান থেকে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই দুপুর দুটো নাগাদ মৃত্যু হয় ওই যুবকের। মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বোলপুর বাইপাস থেকে ইলামবাজার যাওয়ার মূল রাস্তাটি বালি বোঝাই ট্রাক্টর ও বাঁশ দিয়ে ঘিরে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে জনতা। তারা দাবি করতে থাকে, অবিলম্বে ঘটনাস্থলে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের এসে কেন এমন ঘটনা ঘটল, তার জবাব দিতে হবে।
বিক্ষোভকারী ইদ মহম্মদ, রতন খান, ইসরাইল খানদের অভিযোগ, ‘‘পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়ে রাস্তায় লুকিয়ে পড়ে থাকল। অথচ পুলিশ একবারও ফিরেও তাকালো না! এর প্রতিবাদেই রাস্তা অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছি।’’ দু’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পথ অবরোধ চলে। আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্স-সহ অনেক যানবাহন। শেষে বোলপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাদেরও গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে প্রথমে সেই স্থান থেকে ফিরে যান পুলিশকর্মীরা। এর কিছুক্ষণ পর এসডিপিও (বোলপুর) অভিষেক রায়ের নেতৃত্বে বড় পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। অবরোধকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় । প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ওই রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, যে গাড়িটি ধাক্কা মেরেছে বলে অভিযোগ, সেটি জেলা পুলিশ লাইনের ‘প্রিজার্ভ ভ্যান’। এদিন গাড়িটি বর্ধমান আদালতে যাচ্ছিল।