Snake

দীনবন্ধুর যত্ন, বাচ্চার জন্ম দিল আহত সাপ

 সিউড়ির শেহাড়াপাড়ার বাসিন্দা দীনবন্ধুবাবু বরাবরই সিউড়ি এবং লাগোয়া এলাকা থেকে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে বন দফতরের সহযোগিতায় সেগুলিকে পুনর্বাসন দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২০ ০২:০২
Share:

এই সব সাপকেই পুনর্বাসন েদওয়া হবে। নিজস্ব চিত্র

আহত অন্তঃসত্ত্বা সাপটি উদ্ধার করেছিলেন মাস দু’য়েক আগে। তারপর নিজের বাড়িতে রেখেই সাপটির পরিচর্যা করে গিয়েছেন ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর সদস্য, শিক্ষক দীনবন্ধু বিশ্বাস। ৬২ দিন পর সাপটি ১০টি বাচ্চার জন্ম দেওয়ায় খুশি অজয়পুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক দীনবন্ধুবাবু। আজ, বৃহস্পতিবার বন দফতরের সহযোগিতায় সাপগুলিকে পুর্নবাসন দেওয়া হবে।

Advertisement

সিউড়ির শেহাড়াপাড়ার বাসিন্দা দীনবন্ধুবাবু বরাবরই সিউড়ি এবং লাগোয়া এলাকা থেকে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে বন দফতরের সহযোগিতায় সেগুলিকে পুনর্বাসন দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। সাধারণ মানুষকে বন্যপ্রাণী সম্পর্কে সচেতনও করেন তিনি। অনেক সময় অসুস্থ অবস্থায় কোনও প্রাণী উদ্ধার হলে নিজের বাড়িতে রেখেই তার পরিচর্যাও করেন তিনি। মাস দু’য়েক আগে মহম্মদবাজার থানা এলাকার দুমুনি গ্রামের চাষের মাঠ থেকে আহত অবস্থায় নির্বিষ তুঁতুর বা বোড়া চিতি সাপটিকে উদ্ধার করেছিলেন দীনবন্ধুবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘সাপটিকে দেখেই অনুমান করেছিলাম সেটি অন্তঃসত্ত্বা। বাড়ি নিয়ে গিয়ে সাপটির চিকিৎসা করি। একটি বড় ড্রামের মধ্যে ভিজে বালি দিয়ে সাপটিকে রাখার ব্যবস্থা করি।’’

দীনবন্ধুবাবু জানান, সাপটির বাচ্চা প্রসব করার জন্য অনুকূল পরিবেশের প্রয়োজন ছিল। তাই তিনি অল্প ভিজে বালি দিয়ে অনুকূল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করেন। অবশেষে বুধবার সকালে তিনি দেখেন যে সাপটি ১০টি বাচ্চা প্রসব করেছে। তিনি জানান, অধিকাংশ সাপ ডিম দিলেও, প্রায় ৩০ শতাংশ সাপ সরাসরি বাচ্চা প্রসব করে। এ ক্ষেত্রে শরীরের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোয়। মূলত ডিমের সুরক্ষার জন্য সাপের এই ধরনের অভিযোজন বলে বিশেষক্ষদের একাংশ মনে করেন। তুঁতুর, চন্দ্রবোড়া, বালি বোড়া, মেটেলী প্রভৃতি সাপ এই পদ্ধতিতে বাচ্চা প্রসব করে থাকে।

Advertisement

সব ক’টি বাচ্চাই সুস্থ আছে বলে জানান দীনবন্ধুবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘আমি নিয়মিত সাপটির উপর নজর রাখতাম। যখন উদ্ধার করেছিলাম তখন কোনও ধারালো কিছুর আঘাতে সাপটির গায়ে ক্ষত হয়েছিল। মনে হয়েছিল আহত অবস্থায় অন্তঃসত্ত্বা সাপটিকে ছাড়া ঠিক হবে না। তাই বাড়িতেই রেখেছিলাম।’’

কেবল এই সাপটি নয়। সপ্তাহ দু’য়েক আগেও তাঁর বাড়িতে ডিম ফুটে ১৭টি গোখরো সাপের বাচ্চা বেরিয়েছিল। ওই ডিমগুলিকেও তিনি ২৬ দিন ধরে বাড়িতে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে রেখেছিলেন। দীনবন্ধুবাবুর কথায়, ‘‘পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সমস্ত বন্যপ্রাণীদের বাঁচিয়ে অত্যন্ত প্রয়োজন। বর্ষার সময় বেশি সাপ বেরোয়। অনুরোধ করব সাপ দেখলে যেন কোনও ক্ষতি না করা হয়। প্রয়োজনে বন দফতর বা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলেই হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement