ধৃত: (বাঁ দিক থেকে) শান্তনু মাহাতো ও লাল্টু বাউড়ি। নিজস্ব চিত্র
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরবাইক থেকে পড়ে গিয়েছিলেন দু’জন। উদ্ধার করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। পাশে পড়ে আগ্নেয়াস্ত্র। শুক্রবার রাতে ওই ঘটনায় এক শিক্ষক ও তাঁর সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার খাতড়া আদালতে দু’জনেরই দু’দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত শিক্ষকের নাম শান্তনু মাহাতো ওরফে বাবলু। বয়স বছর তেত্রিশ। বাড়ি খাতড়া শহরের বিদ্যাসাগরপল্লিতে। মহকুমা স্কুল সহ-পরিদর্শক (খাতড়া) অনিমেষ শতপথী জানান, শান্তনু হিড়বাঁধ ব্লকের একটি মাধ্যমিক স্কুলে ইংরেজির শিক্ষক। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা নাগাদ একটি মোটরবাইকে সিমলাপালের দিক থেকে খাতড়ার দিকে আসছিলেন দু’জন। দহলা গ্রামের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যান। উদ্ধার করতে গিয়ে টহলদার পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ারেরা দেখেন, পাশেই পড়ে একটি দেশি পিস্তল ও এক রাউন্ড কার্তুজ। ঘটনাস্থল থেকেই শান্তনু ও এক মত্ত যুবককে আটক করে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, ওই যুবক শান্তনুর সঙ্গে ছিলেন না। তখন তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। জেরায় শান্তনু দাবি করেন, তাঁর সঙ্গে ছিলেন খাতড়া থানার শালুকা গ্রামের লাল্টু বাউড়ি (১৯)। দুর্ঘটনার পরে তিনি পালিয়ে যায়ন। শুক্রবার রাতেই পুলিশ গ্রেফতার করে লাল্টুকে। বেআইনি ভাবে অস্ত্র রাখার অভিযোগে মামলা রুজু হয় তাঁদের বিরুদ্ধে।
পুলিশের দাবি, শুক্রবার রাতে খাতড়ার একটি গয়নার দোকানে ডাকাতির মতলবে কিছু দুষ্কৃতী মোটরবাইকে সিমলাপালের দিক থেকে আসবে বলে গোপন সূত্রে খবর ছিল। সেই মতো দহলা এবং সাবুবাইদ মোড়ে ওঁৎ পেতে ছিলেন পুলিশকর্মীরা। তদন্তকারীদের দাবি, দূর থেকে সেটা ঠাহর করার পরেই কোনও ভাবে মোটরবাইকের নিয়ন্ত্রণ হারানোয় শান্তনুরা পড়ে যান। শান্তনুর কোমরে পিস্তল গোঁজা ছিল। দুর্ঘটনার সময়ে সেটি ছিটকে পড়ে।
পুলিশের দাবি, খাতড়া শহরের দাসের মোড়ে একটি গয়নার দোকানে ডাকাতির মতলবে ওই দু’জন আসছিলেন বলে জেরায় তাদের কাছে স্বীকার করেছেন। শনিবার আদালতে সরকার পক্ষের আইনজীবী সন্দীপ দে ধৃতদের ৭ দিন পুলিশি হেফাজতের আবেদন করেন। ১১ নভেম্বর দু’জনকে ফের আদালতে তোলা হবে বলে জানানো হয়েছে। এসডিপিও (খাতড়া) বিবেক বর্মা বলেন, ‘‘কোথা থেকে, কী ভাবে ওই দু’জন বেআইনি অস্ত্র পেলেন, জিজ্ঞাসাবাদ করে তা জানার চেষ্টা হবে।’’ তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী অসীমকুমার গোপের দাবি, তাঁর মক্কেলরা নির্দোষ, মিথ্যা মামলায় পুলিশ দু’জনকে ফাঁসিয়েছে।