মেডিক্যালের নিরাপত্তায় জোর বৈঠকে

বুধবার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘হাসপাতালে রোগীর সঙ্গে অনেক সময় একাধিক লোক ঢুকে যান। কখনও কখনও দশ-বারো জনও ঢুকে পড়েন। এ ক্ষেত্রে কোনও ভাবেই বেশি লোকজনকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এই হাসপাতালের উপরে জেলার অনেক মানুষ নির্ভরশীল। তাই চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, প্রাথমিক ভাবে তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়ারোগী-মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধার পরে, পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো মেডিক্যালের নিরাপত শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:১৯
Share:

খতিয়ে: পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে পুলিশ ও প্রশাসন। নিজস্ব চিত্র

রোগী-মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধার পরে, পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো মেডিক্যালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ও জেলা পুলিশ-প্রশাসন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বৈঠকে বসে ঠিক করে কোনও ভাবেই হাসপাতালের ভিতরে অবাঞ্ছিত ভিড় বরদাস্ত করা হবে না। সে জন্য তাঁরা বেশ কিছু পদক্ষেপ করছেন।

Advertisement

বুধবার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘হাসপাতালে রোগীর সঙ্গে অনেক সময় একাধিক লোক ঢুকে যান। কখনও কখনও দশ-বারো জনও ঢুকে পড়েন। এ ক্ষেত্রে কোনও ভাবেই বেশি লোকজনকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এই হাসপাতালের উপরে জেলার অনেক মানুষ নির্ভরশীল। তাই চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, প্রাথমিক ভাবে তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে।’’

পুরুলিয়া শহরের হুচুকপাড়ার এক বৃদ্ধকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সোমবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পরে, তাঁর মৃত্যু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগীকে বাঁচাতে তাঁরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছিলেন। তা সত্ত্বেও রোগীর পরিজনদের একাংশ এক ডাক্তার ও নার্সকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করেন।

Advertisement

কয়েক মাস আগের এনআরএস-কাণ্ডের পরে, সোমবারের ঘটনাটি হালকা ভাবে নেয়নি পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মৃতের ছেলে-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতেরা বর্তমানে জেলে।

মঙ্গলবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে বৈঠকে জেলাশাসক ছাড়া, ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) ইন্দ্রনীল মুখোপাধ্যায়, পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পীতবরণ চক্রবর্তী, সুপার শ্যামাপ্রসাদ মিত্র প্রমুখ। হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থার প্রতিনিধিকেও বৈঠকে ডাকা হয়।

জানা গিয়েছে, ওয়ার্ডের ভিতরে যে ভাবে থিকথিকে ভিড় থাকে, তা কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, সেটাই বেশি ভাবিয়েছে আধিকারিকদের। কারণ জরুরি বিভাগে কখনও সখনও রোগীর সঙ্গে দশ-বিশ জন ঢুকে যান। রোগীকে ওয়ার্ডে ভর্তি করার সময়ে তাঁর সঙ্গে চার-পাঁচ জন কখনও বা তারও বেশি লোকজন সেখানে পৌঁছে যান। রোগীর সঙ্গে থাকা লোকজনের সংখ্যা বেশি হলে লিফটের মাধ্যমে ওয়ার্ড পর্যন্ত সকলের যাওয়া সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে সিঁড়ি দিয়ে অনেকেই ওয়ার্ডে যান।

‘ভিজ়িটিং আওয়ার’-এও রোগীকে দেখতে তাঁর একাধিক পরিজন ওয়ার্ডে যেতে পারতেন। তা ছাড়া, রাতের খাবার পৌঁছে দিতে রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত অলিখিত ভাবে আর একটি ‘ভিজ়িটিং আওয়ার’ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। এত দিন এ ভাবেই চলছিল। কিন্তু ভিড় নিয়ন্ত্রণে এ বার কড়া ভূমিকা নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

হাসপাতালের অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘বৈঠকে মূলত নিরাপত্তাই ছিল আলোচনার বিষয়। হাসপাতালের ভিতরে অহেতুক বেশি লোকজনের ঢোকা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছি। রোগী ভর্তির সময়ে এক জন বা দু’জন যেতে পারেন। কিন্তু অনেকে ভিতরে ঢুকে গেলে অন্য রোগীদের সমস্যা হয়। তাই কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। শীঘ্রই সে সব কার্যকর করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement