জখম: বিষ্ণুপুর হাসপাতালে অভিজিৎ লোহার। —নিজস্ব চিত্র
বিজেপি নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠল তালড্যাংরার মামড়া গ্রামে। সোমবার রাতের ঘটনা। অভিযোগের তির সিপিএম ও তৃণমূলের দিকে। যদিও দুই দলই ঘটনায় তাদের কোনও রকমের যোগ নেই বলে দাবি করেছে। জখম বিজেপির তালড্যাংরা ৩ মণ্ডল সভাপতি অভিজিৎ লোহার বর্তমানে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে সুভাষ মুর্মু ও বাউল দত্ত নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার অভিজিৎ বলেন, ‘‘সোমবার সন্ধ্যায় আমাদের এক কর্মীর ফোন পেয়ে বাড়ির বাইরে যাই। দেখি, সিপিএম ও তৃণমূলের কিছু লোকজন আমাদের কর্মীদের বাড়ি আক্রমণ করতে শুরু করছে। আমি বোঝানোর চেষ্টা করলে ওরা আমার উপরে চড়াও হয়।’’ অভিযোগ, এলোপাথাড়ি মারধর করা হয় অভিজিৎকে। ছাড়াতে গেলে মারধর করা হয় তাঁর বাবাকেও। অভিজিৎ বলেন, ‘‘নাক মুখ দিয়ে রক্ত বেরোতে দেখে ওরা পালিয়ে যায়। এর পরে পাড়ার বিজেপি কর্মীরা আমাকে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে নিয়ে আসেন।” চিকিৎসকেরা জানান, অভিজিতের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
তালড্যাংরার ওই জায়গাটি বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, এলাকায় সিপিএমের প্রভাব রয়েছে। গত বিধানসভা ভোটে বিষ্ণুপুরে জয়ী হয়েছিলেন সিপিএম এবং কংগ্রেস জোটের প্রার্থী। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষ বলেন, ‘‘অভিজিৎ খুব ভাল সংগঠক। তাই তাঁকে মারধর করে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, এই ঘটনায় বিজেপির পক্ষ থেকে তৃণমূল ও সিপিএমের প্রায় দশ জনের নামে তালড্যাংরা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে নাম রয়েছে তালড্যাংরার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক মনোরঞ্জন পাত্রেরও।
তবে মনোরঞ্জনবাবুর বক্তব্য, ‘‘সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমি বা আমাদের দলের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিজেপি ও তৃণমূলের সংঘর্ষ চলছে টাকা পয়সা নিয়ে। নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’’ ওই বাম নেতার দাবি, বন কমিটির টাকাপয়সা সংক্রান্ত ব্যাপারে স্থানীয় লোকজনের প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন অভিজিৎ। সেই থেকেই ঝামেলা পাকিয়ে উঠেছে। ঘটনায় ধৃত সুভাষ ও বাউল সিপিএমের কর্মী বলে মেনে নিয়েছেন মনোরঞ্জনবাবু। তবে তিনি বলেন, ‘‘ওঁরা এলাকার মানুষ হিসাবেই বন কমিটির আর্থিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন। সেই জন্য ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।’’
তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতারা বলেন, ‘‘খুবই নিন্দনীয় ঘটনা। খোঁজ নিয়ে দেখেছি, আমাদের দলের কেউ এর সঙ্গে জড়িত নয়।’’ পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।