বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
হুল দিবসে বাঁকুড়ায় ভোট প্রচারে এসে কুড়মি ও আদিবাসীদের মধ্যে ‘ভাগাভাগি’ তৈরির জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, জঙ্গলমহলে এমনটা আগে ছিল না। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ মানেননি।শুক্রবার খাতড়া, বাঁকুড়া ও গঙ্গাজলঘাটিতে সভা করেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু। খাতড়ার এটিম গ্রাউন্ডে সভা শুরুর আগে মঞ্চে সিধো-কানহোর ছবিতে শ্রদ্ধা জানান তিনি। জেলা বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা গোপাল হেমব্রমকে প্রণাম করে বক্তব্য রাখা শুরু করেন।শুভেন্দু দাবি করেন, “২০২১-এর নির্বাচনের আগে মমতা কুড়মিদের ডেকে বললেন, তোমাদের এসটি করে দেব। জনজাতির নেতাদের ডেকে বললেন, তোমরা বিরোধ করো। জঙ্গলমহলে আগে সবার মধ্যে ভাল সম্পর্ক ছিল। এই ভাগাভাগি ছিল না। জঙ্গলমহলে নিজেদের মধ্যে এমন লড়াই কেন লাগাচ্ছেন মমতা? তিনি আসলে সনাতনীদের মধ্যে ভাগ করতে চান।’’
তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি আদায়ে কুড়মিদের আন্দোলন ও এ নিয়ে আদিবাসীদের বিরোধকে কেন্দ্র করে বন্ধ-অবরোধের প্রভাব পড়তে দেখা যাচ্ছে জনজীবনে। এই পরিস্থিতিতে হুল দিবসের দিন খাতড়ায় শুভেন্দুর মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
রানিবাঁধের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি বলেন, ‘‘জঙ্গলমহলে শান্তিস্থাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর মানুষকে প্ররোচিত করে এখানে অশান্তি বাঁধানোর চক্রান্ত করছে বিজেপি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার এমন ভিত্তিহীন মন্তব্যে এটা মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেল।”
এ দিন তিনটি সভাতেই শুভেন্দু তৃণমূলকে হারিয়ে ‘দুর্নীতি মুক্ত’ পঞ্চায়েত গড়ার ডাক দেন। তিনি দাবি করেন, বিজেপির পঞ্চায়েত গড়লে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার উপভোক্তা তালিকা পার্টি অফিসে বা পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে হবে না। বিধায়ক, সাংসদ বা দলের জেলা সভাপতিরাও সেখানে নাক গলাবেন না। বছরে চার বার গ্রামসভা হবে। সেখানেই মানুষের সামনে প্রকল্পের উপভোক্তা বাছাই করা হবে। পঞ্চায়েতে রাজনৈতিক রং দেখে কাজ হবে না বলেও দাবি করেন শুভেন্দু।
তিনি বলেন, “খড়, টিন বা টালির বাড়ি যদি কোনও তৃণমূল কর্মীরও থাকে, তাঁকেও বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার সুযোগ বিজেপি দেবে।’’