সিউড়িতে কালীপুজো উদ্বোধনে শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার। নিজস্ব চিত্র।
জেলা সদরে কালী পুজোর উদ্বোধনে এসে বীরভূমের তৃণমূল নেতাদের আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শনিবার সিউড়িতে একাধিক কালীপুজোর উদ্বোধনে এসেছিলেন শুভেন্দু। উদ্বোধনের ফাঁকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল-সহ লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ (রানা), সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী ও এ দিনই সিউড়িতে আসা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে আক্রমণ করেন তিনি। শুভেন্দুর কটাক্ষ, ‘‘কেষ্টর নীচের দিকে গেলে রানা-বিকাশ আর উপরের দিকে গেলে পিসি, ভাইপো, চাচা হাকিম নাম বলবে। ভয়টা সেখানেই।’’
বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ এবং জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীদের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একজন অভিযুক্ত হলেই তিনি দোষী নন। প্রমাণ করতে হয়। তাঁকে আইন পূর্ণ সুযোগ দেয় আত্মপক্ষ সমর্থনের। সেহগালের ক্ষেত্রে যা হয়েছে সবটাই সেই প্রক্রিয়ার অঙ্গ।’’
সন্ধ্যায় সিউড়ির রেড রোজ ক্লাবের কালীপুজোর উদ্বোধনে এসেও ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে শাসক দলকে আক্রমণ করেন শুভেন্দু। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিন, ২ মে ওই ক্লাবের সামনে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছিল। এ দিন সন্ধ্যায় সিউড়ির সেই ক্লাবের কালীপুজো উদ্বোধনে গিয়ে বিরোধী দলনেতার হুঁশিয়ারি, ‘‘২ মে ভুলিনি। কারা ক্লাবের উপরে আক্রমণ করেছিল তাদের তালিকা তৈরি করে আমাকে দিতে বলেছি। কড়ায় গণ্ডায় ইঞ্চিতে সুদ সমেত এই ক্ষত আমরা পুরণ করব।’’
নাম না করে জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নানা মন্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে শুভেন্দুর তোপ, ‘‘খুব বড় বড় নেতা! গুড়-বাতাসা, চড়াম-চড়াম, উন্নয়ন দাঁড়িয়ে! কী বড় বড় লেকচার। সবাই কাঁপছে কলাপাতার মতো। এরা কেউ ভাত-মাছ খায় না। খায় কয়লা-বালি-গরু। এই লোকগুলোকে যদি আমরা জব্দ করতে পারি তাহলে শান্তি পাব।’’
বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সিউড়ি শিয়ালদহ ট্রেন উদ্বোধনের দিন আমি বলেছিলাম। অসুর থাকবে কতক্ষণ অসুর হবেই বিসর্জন। এই যে অসুর এবং তার যারা সহযোগী অনেকেই আমাদের আশ্রয়প্রার্থী। চাণক্য বলে গিয়েছেন শত্রু যদি আশ্রয় চায় তাকে আশ্রয় দেবে। আমরা আশ্রয় দেব কি দেব না ভাবছি। কিন্তু চাণক্য আরও বলেছিলেন শত্রুকে আশ্রয় দেওয়ার পরও যাত্রাপথ নিষ্কণ্টক করতে হবে। যাত্রাপথ আমরা নিষ্কণ্টক করব বীরভূমে। সেটাই হবে বিজয় যাত্রা।’’
তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বিজেপি নেতাদের পাল্টা কটাক্ষ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘জানিনা সিউড়ি শহর সম্বন্ধে শুভেন্দু অধিকারী কতটা জানেন। গত পুরসভা নির্বাচনের কোনও অস্তিত্ত্ব ছিল না বিজেপির। এখন অনুকূল পরিবেশ পেয়েছেন ভেবে শুভেন্দু অধিকারীরা লাফাচ্ছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তৃণমূল একই জায়গায় থাকবে।’’