সিউড়ী পৌরসভা। — ফাইল চিত্র।
নতুন বাড়ি বা আবাসন তৈরির ছাড়পত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে গাছ লাগানোর প্রতিশ্রুতি মানতেই হবে সিউড়ি শহরের বাসিন্দাদের৷ না হলে পড়লে হবে জরিমানার মুখে। এর জন্য বাড়ি বা আবাসন তৈরির ছাড়পত্রের আবেদনের যে ফর্ম, সেখানেও বিষয়টি স্পষ্ট উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে সিউড়ি পুরসভার তরফে। বাড়ি বা আবাসন তৈরির সময় বড় গাছ লাগালে বিশেষ ছাড় দেওয়া হবে পুরসভার করের ক্ষেত্রেও৷ আগামী দিনগুলিতে যাতে সিউড়ি শহর তাপপ্রবাহের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারে, সেই ভাবনা থেকেই এই উদ্যোগ বলে দাবি পুরসভার।
সিউড়ি পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর বছর শহরে গরম বেড়েই চলেছে। এ বারেও টানা তাপপ্রবাহের কবলে পড়তে হয়েছে শহরকে। এর কারণ হিসেবে অনেকেই শহরে গাছের পরিমাণ কমে যাওয়াকে দায়ী করছেন। পুর-কর্তৃপক্ষের মতে, এখন থেকেই গাছ লাগানো হলে কিছু বছর পরে পরিস্থিতির বদল হতেই পারে।
শনিবার সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জল চট্টোপাধ্যায় জানান, দিন কয়েক আগে থেকেই এই নির্দেশিকা কার্যকর করেছে পুরসভা। তিনি বলেন, “বাড়িতে ছোট টবে বা ঘরের ভিতরে কোনও সৌখিন গাছ লাগালে আমাদের সমস্যার সমাধান হবে না। তাই ফর্মে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আম, জাম, কাঁঠাল, দেবদারুর মতো গাছই লাগাতে হবে। গাছ লাগিয়ে এক দিনে হয়তো পরিস্থিতির বদল হবে না, তবে একদিন না একদিন নিশ্চয়ই হবে।”
পুরপ্রধানের দাবি, নতুন বাড়ি বা আবাসনে গাছ লাগানোর পাশাপাশি পুরসভার তরফ থেকেও আসন্ন বর্ষায় শহরে পাঁচ হাজার গাছ লাগানো হবে। যে বাড়ি বা আবাসনগুলি এই নিয়ম মানবে না, তাদের থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের জরিমানা আদায় করে সেই টাকা দিয়ে পুরসভা নিজের উদ্যোগে গাছ লাগাবে।
উত্তাপ নিয়ন্ত্রণের ভাবনার পাশাপাশি, শহরের জল সমস্যা সমাধানের বিষয়টি নিয়েও ভাবা হয়েছে এই নতুন নিয়মে। শহরে নতুন যে বাড়ি বা আবাসনগুলি তৈরি হচ্ছে, সেখানে নির্মাণের ছাড়পত্র পেতে হলে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহারের (জল ধরো, জল ভরো প্রকল্প)পদ্ধতিও রাখতেই হবে বলে জানান হয়েছে আবেদনের ফর্মে। সিউড়ি পুরসভার এই উদ্যোগে খুশির স্থানীয় বাসিন্দারাও। শহরের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা বিনোদবিহারী দত্ত, রমাকান্ত হালদার বলেন, “বহু বছর ধরে শহরে আছি। শুধু গাছ কাটা আর বড় বড় বাড়ি বা বহুতল হওয়াই দেখছি। প্রকৃতি যখন উত্তাপ বাড়িয়ে আমাদের এই ভুল ধরিয়ে দিচ্ছে, তখন এই উদ্যোগ জরুরি। সিউড়ি পুরসভা যদি এই উদ্যোগ সফল করতে পারে, তা হলে শহরের চরিত্র অনেকটাই বদলে যাবে। আশা করব, সব সাধারণ মানুষ এই উদ্যোগে পুরসভাকে সহযোগিতা করবে।”