ধৃত সমীর শেখকে। সোমবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
রামপুরহাটের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ খুনে অভিযুক্ত বাবা-ছেলের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল সিউড়ির অবকাশকালীন বিশেষ আদালত। সোমবার সোনা শেখ ও তাঁর ছেলে নূর ইসলাম ওরফে সঞ্জু শেখের জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ার কথা জানিয়েছেন সিবিআইয়ের পক্ষের আইনজীবী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়।
আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মামলায় সিবিআইয়ের হাতে ধৃত সঞ্জু ও সোনা শেখ এ দিন সিউড়ির অবকাশকালীন বিশেষ আদালতে (উচ্চতর আদালত) জামিনের আবেদন করেন। জামিনের বিরোধিতায় আইনজীবী নিয়ে সিউড়ি আদালতে উপস্থিত ছিলেন সিবিআইয়ের তিন আধিকারিক। জামিন খারিজ হতেই আধিকারিকেরা আদালত থেকে বেরিয়ে যান।
গত ২১ মার্চ রাত ৮টা নাগাদ রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে, জাতীয় সড়কের উপরে বোমা মেরে খুন করা হয় স্থানীয় বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা ভাদু শেখকে। অভিযোগ, ওই হত্যাকাণ্ডের বদলা নিতে বগটুই গ্রামে পরের পর বাড়িতে আগুন লাগায় ভাদু অনুগামীরা।
২২ মার্চ সকালে বগটুইয়ে সোনা শেখের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় সাত-সাত জনের পুড়ে খাক হওয়া যাওয়া দেহ! সব মিলিয়ে সে রাতে পুড়িয়ে-কপিয়ে খুন করা হয়েছিল ৯ জন মহিলা-সহ ১০ জনকে। সোনা নিজে অবশ্য সে রাতে বাড়িতে থাকেননি। বিপদ বুঝে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন।
২৫ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বগটুই-হত্যাকাণ্ডের তদন্ত যায় সিবিআইয়ের হাতে। পরে ভাদু-খুনের তদন্তও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে যায়। সিবিআই সূত্রের খবর, ভাদু শেখ খুনের এফআইআরে দু'নম্বরে নাম ছিল সোনা শেখের। তাঁর দুই ছেলে মাসাদ শেখ এবং সঞ্জু ওরফে নূর ইসলামের নামও ছিল। সঞ্জু পরে গ্রেফতার হয়। গত জুন মাসে ভাদু খুনের সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট রামপুরহাট আদালতে জমা দেয় সিবিআই। উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে সে-সময় সোনা ও মাসাদের নাম বাদ যায় চার্জশিট থেকে। যদিও সঞ্জুর নাম ছিল।
ভাদু খুনে অন্যতম অভিযুক্ত নূর ইসলাম ওরফে সঞ্জুকে গত ৩১ মার্চে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তাঁর বাবা সোনা শেখ ধরা পড়েছেন সপ্তাহ তিনেক আগে। বগটুই-কাণ্ডের প্রায় সাত মাসের মাথায় সিবিআই বীরভূমের সিউড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় ভাদু খুনে অন্যতম অভিযুক্ত সোনা শেখকে।