বহু আবেদন, বাতিল সিংহভাগ
Suri

প্রচেষ্টা নিয়ে হিমশিম অনলাইনেও

কেউ প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার যোগ্য কি না তা খতিয়ে দেখতে গিয়েই কপালে ভাঁজ পড়ার জোগাড়। কারণ অহেতুক আবেদন করায় ৭৫ শতাংশ আবেদনই বাদ যাচ্ছে।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২০ ০৩:৩৬
Share:

একটানা: মঙ্গলবার রাত ১০টাতেও প্রচেষ্টা প্রকল্পের কাজ চলছে পাইকর ব্লক অফিসে। ছবি: তন্ময় দত্ত

সমস্যা থাকায় অফলাইন বাদ দিয়ে সরকারি ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্পের অনলাইন আবেদনের ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু উপযুক্ত নন, এমন বহু আবেদন মধ্যে থেকে সরকারি ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্পের প্রকৃত প্রাপক কারা হবেন, তা যাচাই করতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে। রাত অবধি কাজ করছেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রতি ব্লকে কোথাও দেড়, কোথাও দুই, কোথাও বা তিন হাজার আবেদনপত্র জমা পড়েছে। কেউ প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার যোগ্য কি না তা খতিয়ে দেখতে গিয়েই কপালে ভাঁজ পড়ার জোগাড়। কারণ অহেতুক আবেদন করায় ৭৫ শতাংশ আবেদনই বাদ যাচ্ছে।

Advertisement

অসংগঠিত ক্ষেত্রের কাজহারা শ্রমিকদের এককালীন সাহায্যের জন্যই এপ্রিলের মাঝামাঝি নাগাদ রাজ্য সরকার প্রচেষ্টা নামক ওই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করে। তাতে বলা হয়েছিল সামাজিক সুরক্ষা যোজনার সুযোগ-সুবিধা বা সামাজিক পেনশন পান না, তেমন অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকরা মাথাপিছু এককালীন এক হাজার টাকা করে পাবেন। কিন্তু গত ২৭ এপ্রিল ‘প্রচেষ্টার’ ফর্ম জমা দেওয়ার জন্য বহু প্রশাসনিক দফতরে ভিড় করে জনতা। তাতে পারস্পরিক দূরত্ববিধি বজায় রাখা যাবে না, সংক্রমণ বাড়তে পারে এই আশঙ্কায় প্রকল্পের আবেদন পত্র নেওয়া স্থগিত রাখা হয়। পরে ‘প্রচেষ্টা’ অ্যাপ ডাউনলোড করে অনলাইন অবেদন পত্র জমা দেওয়ার কথা বলা হয়। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে চলতি মাসের চার তারিখ থেকে।

কিন্তু একেবারে সাধারণ মানুষ যাঁদের ‘স্মার্টফোন’ নেই, তাঁরা ‘অ্যাপ’-এর সুবিধা নিতে পারছেন না। অ্যাপে আবেদন করার শুরুতে মোবাইল নম্বর দেওয়া হলেও, ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) আসছে না । প্রথম কয়েকদিন অন্য জেলার মতো বীরভূমেও এমন অভিযোগ ছিল। কিন্তু প্রাথমিক সমস্যা কাটিয়ে প্রতিটি ব্লকে ব্লকে যে সব আবেদন জমা পড়েছে সেগুলি খতিয়ে দেখতে গিয়েই সমস্যায় পড়েছে প্রশাসন। যেমন মুরারই ২ ব্লকে তিন হাজার আবেদন, দুবরাজপুরে ১৬৮০, খয়রাশোলে ১৯০০, নলহাটি ১ ও দুই ব্লকে ১৩০০ ও ১৫০০ আবেদন জমা পড়েছে। প্রাথমিকভাব যেটুকু জানা গিয়েছে, সেগুলির মধ্যে ৭৫ শতাংশই বাদ দিতে হবে। মুরারই ২ ব্লকের তিন হাজার আবেদনের মধ্যে এখনও পর্যন্ত বাছাই করা গিয়েছে তিনশোর মতো আবেদন।

Advertisement

প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে যাঁরা আবেদন করেছেন সেই আবেদনকারী বা তাঁর পরিবারের সদস্যদের কেউ কেউ সামাজিক সুরক্ষা যোজনার সুযোগ-সুবিধা, যেমন বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ,কৃষক বন্ধু বা ১০০দিনের কাজের প্রকল্পের জবকার্ড হোল্ডার।

এর সঙ্গে আরও একটি অসুবিধা যোগ হয়েছে। জেলার বিডিওদের একাংশ বলছেন, প্রকল্পের সুবিধা প্রকৃতদের দেওয়াই মূল লক্ষ্য। কিন্তু লকডাউনের জন্য প্রতিটি সরকারি অফিসে ১০০ শতাংশ কর্মীর হাজিরা বাধ্যতামূলক করা যাচ্ছে না। প্রয়োজনের তুলনায় কম সংখ্যক কর্মীদের নিয়ে কাজ চলছে। যান চলাচল বন্ধ। তার মধ্যে প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার উপযুক্ত আবেদন কোনগুলি, রাতদিন কাজ করলেও সেটা খতিয়ে দেখতে সময় লেগে যাচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement