(বাঁ দিকে) ‘পুরাতন’ ছবির পোস্টার। ছবির পোস্টার হাতে সুমন ঘোষ, শর্মিলা ঠাকুর এবং ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (ডান দিকে)।) ছবি: সংগৃহীত।
নতুন কোনও কাজের সঙ্গে তৈরি হয় নতুন বন্ধুত্ব, বাড়ে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাও। ‘পুরাতন’ ছবিটির কাজ যত এগিয়েছে, অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের মনে আরও বেশি করে এই ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে। সুমন ঘোষ পরিচালিত এই ছবিতে ঋতুপর্ণার সঙ্গেই রয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর। বুধবার বড়দিনে প্রকাশ্যে এসেছে শর্মিলা ঠাকুর এবং ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত অভিনীত এই ছবির পোস্টার। নির্মাতারা জানিয়েছেন, ছবিটি ২০২৫-এর ১১ এপ্রিল, অর্থাৎ বাংলা নববর্ষ নাগাদ মুক্তি পাবে।
সম্প্রতি কয়েক দিনের জন্য শহরে এসেছিলেন শর্মিলা। বুধবার আনন্দবাজার অনলাইনকে ঋতুপর্ণা জানালেন, ব্যস্ততার মাঝেও তিনি সময় দিয়েছিলেন। ছবির পোস্টার এবং মুক্তির দিন ঘোষণার জন্য আলাদা করে ভিডিয়ো শুটও করেছেন। ঋতুপর্ণা বললেন, ‘‘গত বছর এই সময়েই আমরা ছবির শুটিং শেষ করেছিলাম। তাই ইচ্ছে ছিল, একটু অন্য ভাবে পোস্টারটা প্রকাশ্যে আনার। সেই ভাবনা থেকেই শর্মিলা আন্টি আমাদের সময় দিয়েছিলেন।’’
এক অর্থে ঋতুপর্ণার উদ্যোগেই প্রায় ১৪ বছর পরে আরও এক বার বাংলা ছবিতে ফিরতে চলেছেন শর্মিলা। সময়ের সঙ্গে বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর সঙ্গে গভীর সখ্য তৈরি হয়েছে ঋতুপর্ণার। সম্প্রতি মাতৃহারা হয়েছেন ঋতুপর্ণা। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত নতুন ছবির কাজ শুরু করতে পারেননি। মনের অবস্থা ভাল নেই তাঁর। কিন্তু পাশে পেয়েছেন শর্মিলাকে। আবেগঘন কণ্ঠে ঋতুপর্ণা বললেন, ‘‘আমার মা যখন প্রায় কোমায়, তখন শর্মিলা আন্টি আমার খবর নিতেন। বলতেন, ‘মায়ের সঙ্গে কথা বলবে। মা কিন্তু শুনতে পাচ্ছেন’।’’
‘পুরাতন’ ছবির শুটিংয়ের ফাঁকে (বাঁ দিক থেকে) সুমন ঘোষ, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত এবং শর্মিলা ঠাকুর। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।
ঋতুপর্ণা জানালেন, তাঁর মা প্রয়াত হওয়ার পরেও ফোন করে খোঁজ নেন শর্মিলা। ঋতুপর্ণার কথায়, ‘‘কত সুন্দর ভাবে নিজের পরিবারকে তৈরি করেছেন শর্মিলা! ৮০তম জন্মদিনে তো পুরো পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটালেন। তিনি তো আমার মায়ের মতোই। সে দিন দেখা হওয়ার পরেও কত কথা বললেন। আমার মা আর ছবিটা দেখে যেতে পারলেন না বলেও খুবই দঃখ করলেন।’’ উল্লেখ্য, এই ছবিতেও মায়ের জন্মদিন পালন করতেই স্বামীর সঙ্গে বাড়ি ফিরছে ঋতুপর্ণা অভিনীত চরিত্রটি।
বড় মাপের অভিনেত্রীদের মধ্যে অনেকেই হয়তো ছবির শুটিংয়ের পর অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু ঋতুপর্ণার দাবি, শুরু থেকেই শর্মিলা এই ছবি নিয়ে উত্তজিত। শুটিং থেকে শুরু করে ছবির প্রচার কৌশল নিয়েও নিজের মতামত জানাচ্ছেন। ঋতুপর্ণা বললেন, ‘‘মুম্বইয়ে ছবির প্রচারে পরিবারকে নিয়ে এসেছিলেন। ছবি দেখার সময় আমাকে অনেক খুঁটিনাটি প্রশ্ন করেছিলেন। এত বছর পর বাংলা ছবিতে ফিরছেন বলে তিনিও কিন্তু ছবিটাকে প্রতি মুহূর্তে গুরুত্ব দিচ্ছেন।’’
বাংলা ছবিতে শর্মিলার প্রত্যাবর্তনে উচ্ছ্বসিত সুমনও। বললেন, ‘‘১৪ বছর পর ওঁর এই ফিরে আসা প্রত্যেক বাঙালির কাছে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে, তাঁর অসাধারণ অভিনয়ের জন্য। মুম্বইয়ে ছবিটা দেখে তিনি নিজেও খুশি হয়েছেন। এর পর বাকিটা দর্শক বলবেন।’’