ভোগান্তি: মর্গের দুর্গন্ধে জেরবার। নিজস্ব চিত্র
মর্গের এসি মেশিন খারাপ। অথচ মর্গে পড়ে রয়েছে বেশ কিছু বেওয়ারিশ মৃতদেহ। দুর্গন্ধে মর্গের ভিতরে প্রবেশ করা দায়। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বাইরেও।
এই ছবি সিউড়ি জেলা হাসপাতালের। কিছুদিন আগে একই অভিযোগে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন রোগীর পরিজনেরা। তার পরে পরেই সেখানে মর্গ থেকে দাবিদারহীন দেহ সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করে প্রশাসন। সিউড়ি জেলা হাসপাতালের ক্ষেত্রে অবশ্য স্থানীয়দের পক্ষ থেকে এখন কোনও অভিযোগ করা হয়নি।
তবে হাসপাতালের কর্মী এবং চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, দ্রুত এসি মেশিন সারানো এবং মৃতদেহগুলির ব্যবস্থা না করা হলে বোলপুরের মতো এখানেও দুর্গন্ধে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠবে সকলের। তখন ক্ষোভ-বিক্ষোভ হতেই পারে।
সিউড়ি, সাঁইথিয়া, মহম্মদবাজার, চন্দ্রপুর, রাজনগর, খয়রাশোল, কাঁকরতলা, লোকপুর, দুবরাজপুর এবং পাড়ুই—এই দশটি থানা এলাকা থেকে দেহ রাখা হয় সিউড়ি হাসপাতালের মর্গে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বছর দুয়েক আগে শেষবারের মত প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেওয়ারিশ মৃতদেহগুলি সৎকার করা হয়েছিল। বর্তমানে মর্গে ১৮টি বেওয়ারিশ দেহ রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ১৩টি দেহ ১০ মাসেরও বেশি সময় ধরে মর্গে রয়েছে। তার উপরে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে মর্গের এসি খারাপ। ফলে মর্গ চত্বরে তীব্র দুর্গন্ধ হচ্ছে। দেহগুলি পচে যাওয়ায় মর্গের মেঝেয় পোকা ঘুরে বেড়াচ্ছে বলেও সূত্রের খবর।
ইতিমধ্যেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এসি মেশিন সারানো এবং দেহগুলির সৎকার করানোর জন্য মহকুমাশাসক (সিউড়ি সদর) রাজীব মণ্ডলকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও মর্গের এসি ঠিক করা হয়নি। হাসপাতালের সুপার শোভন দে বলেন, ‘‘এসিগুলি খারাপ হয়ে গিয়েছে। আমি সারানোর জন্য বলেছি। তা ছাড়া, নিয়ম মেনে দেহগুলিকে সৎকার করার জন্যও আবেদন করা হয়েছে।’’
মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘সুপার চিঠি দিয়েছিলেন ঠিকই। এসি-তে ইলেকট্রিকের সমস্যা ছিল বলে শুনেছি। কিন্তু এখনও কেন সেটা হয়নি, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘দেহগুলি সৎকারের বিষয়টি সংবেদনশীল। আমরা এই ব্যাপারটি নিয়েও নিয়ম মেনে এগোচ্ছি।’’
হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, দুর্গন্ধের কারণেই এসি মিস্ত্রিরা মর্গে ঢুকতে চাইছেন না। তাই এসিগুলি সারানো হয়নি।