(বাঁ দিকে)সায়নী ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার (ডান দিকে) — ফাইল চিত্র।
ভোট প্রচারে এসে আর জি কর কাণ্ডকে সামনে এনে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। অন্য দিকে রাজ্য যুব তৃণমূলের সভানেত্রী তথা সাংসদ সায়নী ঘোষ এলাকায় এসে বাড়ির মহিলাদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করলেন, তবে আর জি কর নিয়ে একটি কথাও শোনা গেল না তাঁর মুখে। বৃহস্পতিবার প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ব্যবধানে যুযুধান দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের নির্বাচনী প্রচার কর্মসূচিকে ঘিরে দিনভর সরগরম থাকল তালড্যাংরা।
এ দিন বিজেপির মিছিল ও সভা ছিল তালড্যাংরা বাজারে। উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রাজ্য নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়, বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, বাঁকুড়ার প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার প্রমুখ। দলীয় প্রার্থী অনন্যা রায় চক্রবর্তীকে নিয়ে মিছিল শেষ করে তালড্যাংরা পানবাজারের সামনে সভা করে বিজেপি। বক্তব্যে আগাগোড়া সরকারি ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও রাজ্যের নারী নিরাপত্তা নিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন সুকান্ত।
তিনি বলেন, “আর জি কর কাণ্ডের সমস্ত তথ্য তথ্য প্রমাণ লোপাট করে দিয়েছে। আপনি চান আপনার বাড়ির মেয়ের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটুক? যদি না চান তাহলে বিজেপিকে ভোট দিন। বিজেপিই কেবল লড়েছে রাজ্যে নির্যাতনের বিরুদ্ধে। বিজেপিকে ভোট দিয়ে আর জি করের প্রতিবাদ জানান।” তাঁর দাবি, বিজেপি ক্ষমতায় এলে নারী নির্যাতন হলে মহিলার বাড়িতে ক্ষতিপূরণের ‘চেক’ দিতে যাবে না তাঁদের সরকার। বুলডোজার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে অপরাধীদের বাড়ির সামনে। উপনির্বাচনে জেতালে হয়তো সরকার বদল হবে না, কিন্তু মানুষজনের প্রতিবাদটা নথিভুক্ত হব
তালড্যাংরা বাজারে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র।
অন্য দিকে এ দিন বিকেলে তালড্যাংরার বিবড়দা হাটতলায় দলীয় প্রার্থী ফাল্গুনী সিংহবাবুকে নিয়ে মিছিলে হাঁটেন সায়নী। তৃণমূলের মিছিল দেখতে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো মহিলা, শিশুদের সঙ্গে জনসংযোগ করেন সায়নী। পরে সভায় তিনি বলেন, “মায়েরা সঙ্গে আছেন তো? মায়েরা বোঝেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি না থাকেন তাহলে আমাদের কিছু থাকবে না। মায়ের মতো গোটা রাজ্যবাসীর কথা তিনি ভাবেন।”
সায়নীর দাবি, ভোট এলেই বিজেপি বলে ‘কহনা প্যার হ্যায়’, ভোট মিটে গেলেই ‘তোমার দেখা নাই রে’। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই পাকা বাড়ি বানিয়ে দেবেন, দিল্লির কাছে আর হাত পাতা হবে না। বাড়ির সামনে রাস্তা বানিয়ে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।বি
বিবড়দা হাটতলার সভায় তৃণমূল সাংসদ সায়নী ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
সায়নী আর জি কর নিয়ে কোনও মন্তব্য না করায় বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলের কটাক্ষ, “এক জন মহিলা হয়েও আর জি করে নিহত তরুণীর পক্ষে সওয়াল করার ক্ষমতা দেখাতে পারলেন না ওই তৃণমূল নেত্রী!” পাল্টা বাঁকুড়ার সাংসদ তথা তথা তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “ভোটের সঙ্গে আর জি করের ঘটনার কি সম্পর্ক? বিজেপি মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে, সেটা সবাই জানে।”
অন্য দিকে এ দিন তালড্যাংরা কেন্দ্রের সিমলাপালের লক্ষ্মীসাগর এলাকায় দলীয় প্রার্থী তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহীর সমর্থনে ট্যাবলো প্রচার ও কর্মিসভা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। শুভঙ্কর বলেন, “প্রচারে মানুষের ভাল সাড়া মিলেছে।’’
দলীয় কর্মীর প্রচারে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। —নিজস্ব চিত্র।