বাঁকুড়া জেলা পরিষদের ৪৪ নম্বর আসনে জিতেছেন সুজাতা মণ্ডল। — নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের অন্যান্য জায়গায় জেলা পরিষদের ভোটগণনা শুরু হয়নি। কিন্তু বাঁকুড়ার জয়পুর ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনে তৃণমূলের বিপক্ষে কোনও প্রার্থী না থাকায় শুরুতেই জেলা পরিষদের ভোটগণনা হয়। আর তাতেই বাঁকুড়া জেলা পরিষদের ৪৪ নম্বর আসনে জিতে গিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল।
বাংলার রাজনৈতিক মহল প্রথম সুজাতাকে চিনতে পারে বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের স্ত্রী হিসাবে। তৃণমূল থেকে স্বামীর সঙ্গেই বিজেপিতে গিয়েছিলেন সুজাতা। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়ে আদালতের নির্দেশে নিজের এলাকায় যেতেই পারেননি সৌমিত্র। একা হাতে প্রচার সামলেছিলেন সুজাতা। জেতেন সৌমিত্র। কিন্তু সেই সৌমিত্র এখন সুজাতার প্রাক্তন স্বামী। কিছু দিন আগেই তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। এ বার প্রথম বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ‘খাঁ’ পদবি ছেড়ে ‘মণ্ডল’ সুজাতা প্রার্থী হন। তাঁর দাবি, ১৮ হাজার ভোটে জিতেছেন তিনি।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে স্বামীর সঙ্গে গোলমাল হয় তাঁর। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরেন। বিধানসভা ভোটে প্রার্থীও করে তৃণমূল। ভোটগ্রহণের দিন হুগলির আরামবাগ বিধানসভা কেন্দ্রে গিয়ে বিজেপি কর্মীদের তাড়া খেতে হয়েছিল তাঁকে। লড়াই করেছিলেন, কিন্তু জিততে পারেননি। দু’বছর পর ২০২৩ সালের ১১ জুলাই বিরোধীদের সকলকে ‘তাড়িয়ে’ জয়ী তৃণমূলের সুজাতা। এই প্রসঙ্গে তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘জয়ের বিষয়ে আমি নিশ্চিত ছিলাম। কতটা মার্জিন হবে, সেটা জানারই অপেক্ষা ছিল। সবটাই সাধারণের আশীর্বাদ আর তৃণমূল কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল।’’ একই সঙ্গে সুজাতা বলেন, ‘‘এই জয় খুব একটা সহজ ছিল না। আমি যেখান থেকে দাঁড়িয়েছি, সেটা অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া অঞ্চল। এক মাস ধরে আমি, বুথকর্মী, অঞ্চলকর্মীরা মাটি কামড়ে পড়েছিলাম। দরজায় দরজায় প্রচার করেছি। লোকসভা, বিধানসভায় যেখানে দল মাইনাসে ছিল, আমরা সেই মাইনাস কভার করেছি। সেগুলি লিড হয়েছে। এই জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়, এই জয় গণতন্ত্রপ্রেমী তৃণমূল কংগ্রেসের জয়।’’
সুজাতার পরবর্তী লক্ষ্য যে উন্নয়ন করা, তা-ও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমার তিনটি অঞ্চল। উত্তরবায়, ময়নাপুর, জগন্নাথপুর। সেই অঞ্চলের মানুষের উন্নয়ন করা, ঘরের মেয়ে হয়ে থাকা আমার মূল লক্ষ্য।’’