দ্বন্দ্ব অতীত: আলিঙ্গনে পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল এবং প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার। ছবি: দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
ঝালদার পুরপ্রধান পদে ফিরলেন বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধি সুরেশ আগরওয়াল। ২০২২ সালে তাঁকে পুরপ্রধান পদ থেকে সরিয়েছিল কংগ্রেস ও নির্দল জোট। এ বার কংগ্রেসের সমর্থন নিয়েই পুরপ্রধান হলেন সুরেশ। তবে পাশে নেই তাঁর দল তৃণমূল।
সোমবার দুপুরে ঝালদা পুরভবনে সুরেশকে পুরপ্রধান পদে শপথবাক্য পাঠ করান ঝালদার মহকুমাশাসক রাখি বিশ্বাস। সেখানে সুরেশপন্থী বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের কয়েকজন পুরপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের পুরপ্রতিনিধি বিপ্লব কয়ালও।
শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের পরে মহকুমাশাসক কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে সুরেশের দাবি, ‘‘উনি অসুস্থতার মধ্যেও এসে পুরপ্রধান হিসাবে আমাকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন। সমস্ত পুরপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে শহরের সার্বিক উন্নয়নই হবে আমার প্রধান লক্ষ্য।’’
হাই কোর্ট থেকে সবুজ সঙ্কেত পেয়ে শনিবার পুরভবনে পুরপ্রধান নির্বাচন করেন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল ও কংগ্রেস জোটের পুরপ্রতিনিধিরা। সভায় বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের পাঁচ পুরপ্রতিনিধি ছাড়াও ছিলেন কংগ্রেসের পুরপ্রতিনিধি বিপ্লব কয়াল। তবে গরহাজির ছিলেন অপর কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধি পূর্ণিমা কান্দু।
সে দিন সভা শেষে সুরেশের দাবি ছিল, ছ’জন পুরপ্রতিনিধির সর্বসম্মতিক্রমে তিনি পুরপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। যদিও অপসারিত তৃণমূল পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায় সে দিন বিধি বহির্ভূত ভাবে পুরপ্রধান নির্বাচন করা হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, ১২ আসনের ঝালদা পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পুরপ্রধানের সাত জনের সমর্থন প্রয়োজন।
যদিও এ দিন প্রশাসনের তরফে পুরপ্রধান হিসাবে সুরেশকে শপথবাক্য পাঠ করানোর পরে অভিজ্ঞমহলের অনেকের ধারণা, শীলা যাই বলুন, শনিবারের পুরপ্রধান নির্বাচনকে প্রশাসন এ দিন মান্যতা দিল। এর পরেও কি আদালতে যেতে পারেন শীলারা? সোমবার শীলার প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ নিয়ে মন্তব্য করছি না। তবে মহকুমাশাসক পুরপ্রধান হিসাবে সুরেশ আগরওয়ালকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন বলে শুনেছি।’’
সুরেশদের বিরুদ্ধে কি দল ব্যবস্থা নেবে? পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘শপথগ্রহণের বিষয়টা শুনেছি। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন।’’
তাহলে কি ঝালদা পুরসভার অচলাবস্থা এ বার সত্যি সত্যি কাটতে চলেছে? রাজনীতির কারবারিদের অনেকেরই বক্তব্য, না আঁচালে বিশ্বাস নেই। কয়েকটা দিন না পেরোলে এর উত্তর পাওয়া মুশকিল— জানাচ্ছেন ঝালদা পুরসভায় বারবার ভাঙাগড়ার খেলা দেখতে দেখতে তিতিবিরক্ত বাসিন্দাদের একাংশ। পুরবাসীর দাবি, অনেক লড়াই হল। এ বার স্থায়ী পুরবোর্ডের মধ্য দিয়ে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের লক্ষ্য কাজ করুক ঝালদা পুরসভা।