কর্মীদের সঙ্গে। বাঁকুড়ায় রবীন্দ্রভবনে। নিজস্ব চিত্র
জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অন্তত ৫০ হাজার দলীয় কর্মীকে আগামী মঙ্গলবার তৃণমূলের কর্মী সম্মেলনে হাজির করানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে তৃণমূল। সোমবার দলীয় সূত্রে এই খবর মিলেছে। গন্ধেশ্বরী নদীর চরে ওই কর্মী সম্মেলনে বক্তৃতা করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
পরের সপ্তাহে তিন দিনের জেলা সফরে বাঁকুড়া আসার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আগামী মঙ্গলবার কর্মী সম্মেলনে তাঁর বক্তৃতা করার কথা। সম্মেলনের প্রস্তুতি হিসাবে সোমবার বাঁকুড়া রবীন্দ্র ভবনে এক কর্মিসভায় বক্তৃতা করেন দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর, ওই সভা থেকে তিনি নির্দেশ দেন, মঙ্গলবারের কর্মী সম্মেলনের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা যাবে না।
তৃণমূল সূত্রের দাবি, বক্তৃতায় শুভেন্দুবাবু এ-ও বলেন, ‘যদি এমন হচ্ছে (তহবিল সংগ্রহ) খবর পাই, তা হলে আমার চেয়ে খারাপ লোক আর কেউ হবে না। কেউ যদি এই নির্দেশ অমান্য করেন, তা হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে’। তাঁর আরও নির্দেশ, সম্মেলনের প্রচারের ফ্লেক্সে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া, অন্য কারও নাম ছাপানো যাবে না। বড় জোর সেখানে ব্লক বা অঞ্চল কমিটির নামের উল্লেখ থাকতে পারে। জেলার সবক’টি বুথ থেকে কর্মী আনতে হবে ওই সম্মেলনে।
কর্মিসভায় উপস্থিত এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘দাদা বলেছেন, আমাদের এত জনপ্রতিনিধি আছেন। সম্মেলনে আসা কর্মীদের ডাল-ভাত খেতে দেওয়া আর ত্রিপলে বসানোর ব্যবস্থাটুকু সবাই মিলে করে নিতে পারব। তাই এ জন্য কোনও রকম তহবিল সংগ্রহ করা যাবে না।’’
কর্মী সম্মেলনের আগে জেলাজুড়ে প্রচারের নির্দেশ দিয়েছেন শুভেন্দুবাবু। ওই তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘পরিবহণ মন্ত্রীর নির্দেশ, সম্মেলনের ফ্লেক্স, ফেস্টুনে বাঁকুড়া শহর এমন ভাবে ভরিয়ে দিতে হবে, যাতে শহরকে ‘তৃণমূল নগরী’ বলে মনে হয়। কর্মীদের আরও বলেন, লোকসভার পরাজয়ের ধাক্কা কাটিয়ে দল যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, সেই বার্তা দলনেত্রীকে দিতে হবে কর্মী সম্মেলন থেকে।’’
বাইরে অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করেননি শুভেন্দুবাবু। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়।”
তৃণমূল সূত্রের দাবি, জেলা পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব নেওয়ার পরে ‘তোলাবাজি’ বা ‘কাটমানি’ নেওয়া বন্ধে সরব হয়েছেন শুভেন্দু। এর আগে রবীন্দ্রভবনেই একটি কর্মিসভায় তাঁর সাফ নির্দেশ ছিল, দুর্নীতিতে যুক্ত নেতাদের পাশে দল দাঁড়াবে না। কোনও রকম ‘তোলাবাজি’ তিনি বরদাস্ত করবেন না।
শুভেন্দুর এই সব নির্দেশকে ‘কথার কথা’ বলে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র। তাঁর দাবি, ‘‘এ সব কথার কথা। সত্যিই দলে শুদ্ধকরণের ইচ্ছে থাকলে এত দিন যে সব তৃণমূল নেতারা সাধারণ মানুষের টাকা নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হত।”