আন্দোলন অব্যাহত বিশ্বভারতীতে। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্বভারতীতে অব্যাহত ছাত্র আন্দোলন। পড়ুয়াদের ডাকে সোমবার সপ্তাহের প্রথম দিন ছাত্র ধর্মঘট পালিত হচ্ছে বিশ্বভারতী জুড়ে। বন্ধ সমস্ত ভবন। ডাক দেওয়া হয়েছে পরীক্ষা বয়কটেরও। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সোমবার থেকে পড়ুয়াদের দাবির সমর্থনে আন্দোলনে নেমেছে বিজেপি-র ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-ও। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাড়ি ঘেরাও করেছে তারা। এর পাশাপাশি আমরণ অনশনও শুরু করেছেন বিশ্বভারতীর ছাত্রনেতা সোমনাথ সৌ।
টানা ১৬ দিন ধরে বিশ্বভারতীতে চলছে ছাত্র বিক্ষোভ। সোমবার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। পড়ুয়াদের দাবি, হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে হস্টেল খুলতে হবে। অনলাইনে পরীক্ষা নিতে হবে। বিশ্বভারতীর মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পরীক্ষার সূচি বদল করতে হবে। আদালতের রায়ে হস্টেল খোলার নির্দেশ দেওয়া হলেও, বাকি দুই দাবি এখনও পূরণ হয়নি। তবে হস্টেল সাময়িক ভাবে খোলা হয়েছে।
শমিত মণ্ডল নামে এক বিক্ষোভকারীর কথায়, ‘‘দু’সপ্তাহ ধরে আমাদের আন্দোলন চলছে। আজ বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা ছিল। আমরা পরীক্ষা দিইনি। পাশাপাশি, ক্লাসও হয়নি। আমাদের দাবি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মেনে নেননি। তাই সাধারণ ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।’’ সোমবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছেন, যাঁরা পরীক্ষা দিচ্ছেন না তাঁদের অনুপস্থিত হিসাবে দেখানো হবে।
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের ওই বিজ্ঞপ্তির প্রত্যাহারের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন ছাত্রনেতা সোমনাথ সৌ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিশ্বভারতীতে যে ছাত্র আন্দোলন চলছে তাতে অনেকেই সংহতি জানাচ্ছেন। কিন্তু সেই আন্দোলনকে ভাঙার জন্য বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ দমনপীড়নমূলক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। আমরা এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবি করছি। এই বিজ্ঞপ্তি আমরা মানব না। পাশাপাশি আমাদের তিন দফা দাবিও মানতে হবে। তাই আমরা লড়াইকে শেষ পর্যায়ে নিয়ে যাব বলে স্থির করেছি। তাই আমি আমরণ অনশন শুরু করেছি। আমরা দেখতে চাই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কতদূর যেতে পারে।’’
অন্য দিকে, সোমবার থেকে বিশ্বভারতীতে আন্দোলনে নেমেছে গেরুয়া শিবিরের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-ও। উপাচার্যে র বাড়ি ঘেরাও করেছে তারা। হস্টেল খোলা-সহ পড়ুয়াদের তিন দফা দাবিকে সমর্থনও জানিয়েছে ওই ছাত্র সংগঠনটি। দাবি না মিটলে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বাড়ি ঘেরাও করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে এবিভিপি। ঘটনাচক্রে উপাচার্যের সঙ্গে গেরুয়া শিবিরের যোগাযোগ রয়েছে, এমন তত্ত্বের কথা উঠেছে বিভিন্ন সময়ে। অথচ সেই বিদ্যুতের বিরুদ্ধেই গেরুয়া শিবিরের ছাত্র সংগঠনের আন্দোলন শুরু করায় ‘চমক’ দেখছেন অনেকেই।