সাত দিনের স্কুল-বদল বর্ষাদের

সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামীণ এলাকার স্কুলের সঙ্গে শহর বা মফস্সলের স্কুল নিয়ে এই কর্মসূচি হচ্ছে। সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ৩০ জন করে পড়ুয়া নিজের স্কুল ছেড়ে এক সপ্তাহ অন্য স্কুলে আবাসিক হিসেবে থাকবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০১:৫৬
Share:

পাশে: এক স্কুলের ছাত্রীর তৃষ্ণা মেটাচ্ছে অন্য স্কুলের বন্ধু। নিজস্ব চিত্র

স্কুল থেকে বেড়াতে যাওয়া। তবে অন্য স্কুলে। সেখানে নতুন বন্ধু। ভাগ করে টিফিন খাওয়া। হস্টেলে থাকা। যুগ্ম স্কুল প্রকল্পে দু’টি স্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যে এই ধরনের আদানপ্রদানের কর্মসূচি নিয়েছে সর্বশিক্ষা মিশন। পোশাকি নাম টুইন স্কুল প্রোগ্রাম।

Advertisement

সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামীণ এলাকার স্কুলের সঙ্গে শহর বা মফস্সলের স্কুল নিয়ে এই কর্মসূচি হচ্ছে। সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ৩০ জন করে পড়ুয়া নিজের স্কুল ছেড়ে এক সপ্তাহ অন্য স্কুলে আবাসিক হিসেবে থাকবে। সেখানে শুধু সিলেবাসের লেখাপড়াই নয়, নতুন বন্ধুদের সঙ্গে মিলেমিশে ছবি আঁকা, গান গাওয়া, নাচ, আবৃত্তি প্রভৃতিও করবে তারা।

কিছু দিন আগে, এই প্রকল্পেরই অঙ্গ হিসেবে কাশীপুর জনার্দন গার্লস মেমোরিয়াল হাইস্কুল ও সোনাথলি গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রীরা এই সাময়িক স্কুল বদলে সামিল হয়েছিল। সোনাথলির টুম্পা কুম্ভকার, বর্ষা দে, সুমিত্রা রায়, আমিনা খাতুনরা জানায়, নতুন দিদিমণিদের ক্লাস, নতুন বন্ধুদের সঙ্গে গল্প— সব মিলিয়ে খুবই খুশি তারা। শিবিরের শেষ দিনে‌ দুই স্কুলের ছাত্রীরা একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ছবির প্রদর্শনীও করে। সোনাথলির ছাত্রী বর্ষা মণ্ডল বলে, ‘‘আমি প্রতিদিনের অভিজ্ঞতার কথা ডাযেরিতে লিখেছি। নতুন বন্ধুদের নেমন্তন্ন করে এসেছি।’’ আর কাশীপুর জনার্দন মেমোরিয়ালের ছাত্রী দুর্বা দুবে, সঞ্চারিকা দে, টুইঙ্কল বাউড়ি, রেবতী মাহাতো, রাজলক্ষ্মী বাউ়ড়িরাও ক্লাসের ফাঁকে কাশীপুর রাজবাড়ির অনেক গল্প শুনিয়েছে সোনাথলির বন্ধুদের।

Advertisement

কাশীপুর জনার্দন গার্লস মেমোরিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মিতালি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এক স্কুলের ছাত্রীদের সঙ্গে আর এক স্কুলের ছাত্রীদের লেখাপড়া ও সংস্কৃতির আদান প্রদান ঘটানো। নতুন পরিবেশে নতুন অভিজ্ঞতা হয়। এতে ছাত্রীদের মানসিক বিকাশে সুবিধা হয়।’’ সোনাথলি গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা মীনা দত্ত বলেন, ‘‘আমাদের স্কুল আদিবাসী এলাকায়। ছাত্রীদের মধ্যে অনেক প্রতিভা থাকলেও প্রশিক্ষণের অভাবে তারা সেই প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারে না। কাশীপুর এলাকায় যে সুযোগ রয়েছে আমাদের মেয়েদের সেই সুযোগ নেই। এই কর্মসূচিতে ওরা সমৃদ্ধ হয়েছে।’’

জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিক বিকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘দুটি স্কুলের পড়ুয়ারা একে অপরকে কাছে পেয়ে নিজেদের মধ্যে লেখাপড়া ও সাংস্কৃতিক ভাব বিনিময়ের সুযোগ পেয়েছে। এটাই এই উদ্যোগের সাফল্য।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement