চলছে অবরোধ। নিজস্ব চিত্র
সরস্বতী পুজোর দিনই হঠাৎ বন্ধ। এবং তার জেরে দুর্ভোগে পড়লেন সাধারণ মানুষ।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং ইভিএম বাতিলের দাবিতে বুধবার বহুজন ক্রান্তি মোর্চার পক্ষ থেকে ভারত বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল। রাজ্যব্যাপী ওই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে এ দিন সকাল ১০টায় সংগঠনের নেতা-কর্মীরা রামপুরহাটের মাড়গ্রাম মোড়ে, ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। এক ঘণ্টারও বেশি সময় অবরোধের জেরে যানজট হয়। পরে পুলিশ এসে অবরোধ তুলে দেয়। ১০ জন অবরোধকারীকে গ্রেফতার করে রামপুরহাট থানায় নিয়ে যায়। এই বনধের ফলে এ দিন রামপুরহাট, নলহাটি ও মুরারই রাস্তায় কোনও বাস চলাচল করেনি। পুজোর দিন দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
যাত্রীদের অভিযোগ, আজ যে বনধ আছে, তা-ই তাঁরা জানতেন না। সরস্বতী পুজোর দিন রাস্তা ও বাস বন্ধ থাকায় ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। অনেক ছাত্রছাত্রী এ দিন স্কুল-কলেজও যেতে পারেনি বলে অভিযোগ। লোহাপুরের তানিশা বেগম বলেন, ‘‘এ দিন সকালে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শুনি, বনধের জন্য কোনও বাস চলাচল করছে না। যে সমস্ত ছোট গাড়ি যাতায়াত করছে, তাতে এত ভিড় চাপতে পারিনি। প্রায় দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করে আমায় বাড়ি ফিরতে হয়।’’ তাঁর সংযোজন, বন্ধ ডেকে সমস্যার সমাধান হয় বলে আমি মনে করি না।’’
নলহাটির তেজহাটি গ্রামের বধূ অর্চনা দাসের কথায়, ‘‘সরস্বতী পুজো উপলক্ষ্যে সিউড়িতে বাপের বাড়ি যাচ্ছিলাম। বনধের জেরে এক ঘণ্টা ধরে আটকে থেকে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া হল না। বনধের কথা আগে জানতে পারলে মঙ্গলবারই ওখানে চলে যেতাম।’’ বীরভূম জেলা পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক খুরশেদ আলম বলেন, ‘‘হঠাৎ করে গাড়ি বন্ধ করার ফলে নিত্যযাত্রীরা সমস্যায় পড়েছেন। বাস মালিকদের সঙ্গে কথা বলে বাস চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু বাস মালিকেরা মানেননি। আমাদের সব থেকে খারাপ লাগছে, আজ পুজোর দিনের ছাত্রছাত্রীরা স্কুল কলেজে যেতে পারল না।’’ এনআরসি এবং সিএএ-র বিরুদ্ধে এ দিন খয়রাশোলের ভীমগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের কেন্দ্রগড়িয়া এলাকাতেও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন ওই দলের সদস্যরা। প্রায় আধ ঘণ্টা অবরোধের পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে তা উঠে যায়। সাময়িক যানজটের সৃষ্টি হয়।
দুর্ভোগের কথা অবশ্য মানতে নারাজ বহুজন ক্রান্তি মোর্চার নেতা মানিক হাঁসদা, আব্বাস আলি, সজল দাসেরা। তাঁদের দাবি, ‘‘সাধারণ মানুষ আমাদের বনধকে সমর্থন করেছেন। সিএএ এবং এনআরসি ভারতে কার্যকর হতে আমরা দেব না। আমাদের আরও দাবি, ইভিএমের বদলে ব্যালটে ভোট করাতে হবে।’’