এই টিউবওয়েলের জল থেকেই সমস্যা বলে অনুমান। নিজস্ব চিত্র।
পেটের রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল একটি শিশুর। নিতুড়িয়ার দিঘা পঞ্চায়েতের নবগ্রামে মঙ্গলবার থেকে আরও জনা ছয়েক শিশু ওই রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন বলে ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের বাসিন্দা অটল থানেদারের ছেলে আয়ুষ থানেদার (৬) হারমাড্ডি গ্রামীণ হাসপাতালে বুধবার ভোর ৩টে নাগাদ মারা যায়। বুধবার স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে গ্রামে যান নিতুড়িয়া ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুভাষচন্দ্র মাহাতো। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামের একটি টিউবওয়েলের জল থেকে পেটের রোগ ছড়িয়েছে গ্রামের একাংশে। আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা অবধি প্রতিদিন গ্রামে যাবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ওই টিউবওয়েলের জল ব্যবহার না করার কথা বলা হয়েছে বাসিন্দাদের।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে গ্রামের উপরপাড়ার কিছু পরিবারের শিশু পেটের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। সাত জনকে ভর্তি করানো হয় হারমাড্ডি গ্রামীণ হাসপাতালে। ভোরে আয়ুষের মৃত্যুর পরে, অন্য ছ’জনকে রেফার করে হয়েছে রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিশুদের অবস্থা স্থিতিশীল।
ব্লকের স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, আয়ুষের পেটের রোগ ছাড়াও অন্য কিছু শারীরিক জটিলতা ছিল। বিএমওএইচ বলেন, ‘‘ছেলেটি চরম রক্তাল্পতায় ভুগছিল। পেটের রোগের কারণে শ্বাসকষ্ট তৈরি হয়। তার জেরেই মৃত্যু হয়। ডেথ সার্টিফিকেটে সেটাই লেখা হয়েছে।’’ বিডিও (নিতুড়িয়া) অজয়কুমার সামন্ত বলেন, ‘‘সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রেফার করা অন্য ছ’জন শিশু সুস্থ আছে। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, মৃত শিশুটি আরও কিছু শারীরিক সমস্যায় ভুগে থাকতে পারে। যদিও শিশুটির বাবা অটলবাবুর দাবি, ‘‘আমার ছেলের অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল না।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই পাড়ার যে সমস্ত পরিবারের সদস্যেরা আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁরা পাড়ায় পুকুরের পাশে ওই টিউবয়েলের জল ব্যবহার করেন। তাই প্রশাসনের আশঙ্কা, সেখান থেকেই পেটের রোগ ছড়িয়েছে। এ ছাড়া, পুকুরের জল থেকেও রোগ ছড়াতে পারে বলে মনে করছে প্রশাসন। বিডিও বলেন, ‘‘টিউবওয়েল ও পুকুরের জল বাসিন্দাদের ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। পাশের পাড়াতেই গভীর টিউবওয়েল আছে। কয়েক দিন সেটি ব্যবহার করবেন উপরপাড়ার লোকজন। গ্রামে জলের ট্যাঙ্কার পাঠানোর জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে বলা হয়েছে।’’