প্রতীকী চিত্র।
বাসের রুট বদলে এ বার দ্রুত গতিতে শুরু হয়েছে বাঁকুড়ার কাটজুড়িডাঙা রেলগেটে উড়ালপুল তৈরির কাজ। তবে এই কাজের পথে ফের একবার জটিলতার মুখে পড়েছে প্রশাসন। উড়ালপুলের পথে তৈরি সরকারি নির্মাণকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছে সেই জটিলতা।
শহরের পাঁচবাগা এলাকায় সরকারি ভাবে কয়েকটি স্টল তৈরি করা হয়েছিল। সেই স্টল নিয়েই সমস্যা দানা বেঁধেছে। জেলা পূর্ত (সড়ক) বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, উড়ালপুলের জন্য মোট ২৩টি স্তম্ভ তৈরি করা হবে। যার মধ্যে সাতটি ইতিমধ্যেই তৈরি করা হয়ে গিয়েছে। ১২ নম্বর স্তম্ভটি তৈরি করতে সরকারি ভাবে নির্মাণ করা ওই স্টলগুলির বেশ কয়েকটি ভাঙতে হবে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, পাঁচবাগা এলাকায় বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে ১৮টি স্টল গড়া হয়। স্টলগুলি অনগ্রসর শ্রেণির মানুষদের বিলি করা হয়েছিল জেলা পরিষদের মাধ্যমে। বহু বছর ধরে জেলা পরিষদের কাছ থেকে পাওয়া ওই স্টলে ব্যবসা করে সংসার চালাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। উড়ালপুলের জন্য স্টল ভাঙা হবে শুনে চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা।
জেলা পূর্ত (সড়ক) বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, উড়ালপুলের স্তম্ভ গড়ার জন্য অন্তত ১২টি স্টল ভাঙতে হবে। সেখানকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে সুকুমার মণ্ডল, সঞ্জয় রজকেরা জানান, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে তাঁরা স্টলগুলি পেয়েছিলেন। স্টল পেতে প্রথমে তাঁদের ১০ হাজার টাকা দিয়ে আবেদন করতে হয়েছিল। স্টল দেওয়ার পরে মাসে মাসে চারশো টাকা করে ভাড়া নিত জেলা পরিষদ। সেই ভাড়া প্রতি বছর বাড়তে বাড়তে এখন ৭৮২ টাকা হয়েছে। কয়েকমাস আগে জেলা পরিষদের কাছে ওই ব্যবসায়ীরা নতুন করে ভাড়া না বাড়ানোর আর্জি তোলেন। সেই দাবি মেনে নিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত বাঁকুড়া জেলা পরিষদ।
সঞ্জয়বাবু বলেন, “বহু বছর ধরে এই স্টলে ব্যবসা করেই সংসার চালাচ্ছি আমরা। সরকারি নিয়মের মাধ্যমে আমরা স্টল পেয়েছি। এখন যদি উড়ালপুলের জন্য স্টল ভেঙে দেওয়া হয়, তা হলে আমরা কোথায় যাব? কী ভাবে সংসার চালাব?’’ তাঁদের দাবি, যথাযথ ভাবে পুনর্বাসন না দেওয়া পর্যন্ত স্টল ভাঙা যাবে না।
পূর্ত (সড়ক) বিভাগের অভিযোগ, ওই স্টলগুলির মধ্যে ১২টি স্টলই পূর্ত (সড়ক) বিভাগের জমির উপরে নির্মাণ করা হয়েছিল। এমনকি, স্টলগুলি তৈরির জন্য তাঁদের দফতরের কাছ থেকে সেই সময় প্রযোজনীয় অনুমতিও নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন ওই দফতরের কর্তারা। এ নিয়ে সিপিএমের তৎকালীন জেলা সম্পাদক তথা বর্তমানে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র বলেন, “বহু বছর আগের কথা। তখন কী হয়েছিল আমার ঠিক জানা নেই।”
এ দিকে স্টল না ভাঙলে উড়ালপুলের কাজ করা সম্ভব নয় বলে জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছে পূর্ত (সড়ক) দফতর। জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস-এর আশ্বাস, “ওই স্টলের ব্যবসায়ীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ অথবা পুনর্বাসন দিয়েই স্টলগুলি ভাঙা হবে। সমস্যার সমাধানে কী পদক্ষেপ করা হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে।”