বোলপুরের নিচুপট্টিতে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
সিবিআইয়ের দশমবারের তলবও এড়িয়ে গিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। গরু পাচার মামলায় বুধবার বেলা ১১টায় নিজাম প্যালেসে তাঁকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু, শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে অনুব্রত যাননি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বোলপুরের বাড়িতেই রয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি। এ দিন তাঁকে বাড়ি থেকেও বের হতে দেখা যায়নি। কারও সঙ্গে তেমন ভাবে কথাও বলেননি বলে দলীয় সূত্রের খবর। বোলপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ও ছিল কার্যত ফাঁকা।
সব মিলিয়ে নানা দিক থেকে ‘চাপে’ রয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি। যতবার তিনি অসুবিধায় পড়েছেন, ততবারই অনুব্রত মণ্ডল মহাযজ্ঞ করেছেন। বিশেষ সূত্রে শোনা যাচ্ছে, এ বারও নাকি তাঁর বাড়ির ছাদে প্যান্ডেল করা হচ্ছে। তবে, সে প্যান্ডেল যজ্ঞ করার জন্য কি না, তা জানা যায়নি।
সকাল থেকেই অবশ্য সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের ভিড়ে ঠাসা ছিল বোলপুরের নিচুপট্টিতে, অনুব্রতের বাড়ির সামনে। বেলা গড়াতেই পরিষ্কার হয়ে যায়, এ যাত্রাও সিবিআই তলবে সাড়া দিলেন না অনুব্রত। মঙ্গলবার বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসকদের দল তাঁকে দেখে যান। চিকিৎসকদের বেড রেস্টও লিখে দিতে বলেন অনুব্রত বলে অভিযোগ। চিকিৎসকেরাও তাঁকে কলকাতা কিংবা বাইরে কোথাও না-যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেই পরামর্শের সুবাদে এ বারও সিবিআইয়ের তলবে গরহাজির থাকলেন তিনি। বারবার গরহাজির থাকায় সিবিআই আইনগত পদক্ষেপ করতে পারে বলেও জল্পনা রয়েছে।
মঙ্গলবার শারীরিক পরীক্ষা করে মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, অনুব্রতের ফিসচুলার সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, অবসাদ রয়েছে। সূত্রের খবর, এরই মাঝে ফিসচুলার অস্ত্রোপচার করানোর জন্য এ দিন বেসরকারি হাসপাতাল শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের কর্ণধার মলয় পীঠের সঙ্গে আলোচনা সেরেছেন অনুব্রত। মলয় পরে জানান, ফিসচুলার সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় কী করলে ভাল হয়, সেই সম্বন্ধে পরামর্শ করার জন্য অনুব্রত তাঁকে বাড়িতে ডেকেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসক কেমন রয়েছে, যদি হঠাৎ কোনও প্রয়োজন হয় কী ব্যবস্থা রয়েছে, তা এ দিন উনি (অনুব্রত) জানতে চান। তাঁর সঙ্গে এটুকুই কথা হয়েছে।”
এই প্রসঙ্গ তুলেই অনুব্রতকে খোঁচা দিয়েছেন আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। এ দিন দুর্গাপুরে বিজেপির থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, “আজ ডাক্তারবাবুকে বলা হচ্ছে, চাপ দেওয়া হচ্ছে। সাদা কাগজে লিখে দিতে হচ্ছে, ওঁর ফিশচুলা হয়েছে। কাল এসএসকেএমে ডাক্তারবাবুরা বলে দিলেন, সব ঠিক আছে। আর আজ ফিসচুলা বেড়ে গেল?”