—প্রতীকী চিত্র।
হাতে আর মাত্র চার দিন। তার পরেই রঙের উৎসব দোল। কিন্তু এ বছর বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে বসন্ত উৎসব করা হবে কি না তা নিয়ে এখনও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি কর্তৃপক্ষ। ফলে এ বারও দোলের দিন বসন্ত উৎসব পালনের সম্ভাবনা দেখছেন না কেউই। এতেই ক্ষুব্ধ প্রাক্তনী, আশ্রমিক, ব্যবসায়ী ও পর্যটকেরা।
বিশ্বভারতীতে শেষবার বসন্ত উৎসব পালিত হয়েছিল ২০১৯ সালে। তারপর ২০২০-২০২১ সালে অতিমারি ও ২০২২-২০২৩ সালে বিশ্বভারতীর নিজস্ব কিছু কারণে বসন্ত উৎসব হয়নি। গত বছর সেখানে শুধুমাত্র বসন্ত বন্দনার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে আবার অনেককেই ব্রাত্য থাকতে হয়েছিল। জনমত অনুযায়ী, প্রতি বছর যদি এ ভাবে বিশ্বভারতী বসন্ত উৎসব করতে উদ্যোগী না হয় তা হলে আগামিদিনে এই আন্তর্জাতিক মানের উৎসব হারিয়ে যেতে বসবে।
বহু মানুষ আশা করেছিলেন, বিশ্বভারতীর তৎকালীন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অবসর নেওয়ার পরে যে ভাবে মেলার মাঠে পৌষমেলা ফিরেছে, তেমনই বসন্ত উৎসবও ফিরবে। কিন্তু দোল উৎসবের আগে সেরকম কোনও আভাস এখনও মেলেনি। কোনও বৈঠক বা প্রস্তুতি নিতে দেখা যায়নি কর্তৃপক্ষকে। ফলে এত কম সময়ে দোল উৎসবের দিনে বসন্ত উৎসব করা কার্যত অসম্ভব বলে মনে করছেন শান্তিনিকেতনবাসী। এবারও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বসন্ত বন্দনার আয়োজন করতে পারে বলে অনেকের ধারণা। সেখানে বহিরাগতদের প্রবেশ নাও থাকতে পারে।
এর জেরেই ক্ষোভ বাড়ছে আশ্রমিক, প্রাক্তনী, ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের। ঠাকুর পরিবারের সদস্য তথা আশ্রমিক সুদৃপ্ত ঠাকুর বলেন, “বসন্ত উৎসব বাদ দিয়ে হেরিটেজ রক্ষা করা যাবে না। কী ভাবে এর আয়োজন করা হবে তা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত।” প্রবীণ আশ্রমিক তথা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, “এবারও দোলে বসন্ত উৎসব করতে পারবে না বিশ্বভারতী। এটি দুর্ভাগ্যজনক।”
কর্মী ও অধ্যাপকদের অনেকের কথায়, সদিচ্ছার অভাবে এ বছরও বসন্ত উৎসব কার্যত হচ্ছে না। কবিগুরু হস্তশিল্প মার্কেটের সম্পাদক আমিনুল হুদা, বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিংহ বলেন, ‘‘এ বছরও ঐতিহ্যবাহী বসন্ত উৎসব হবে না বলে শুনছি। আবার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’’
বিশ্বভারতীর কর্মীমণ্ডলীর যুগ্ম সম্পাদক কিশোর ভট্টাচার্য বলেন, “এত কম সময়ে আর দোলের দিন বসন্ত উৎসবের আয়োজন করা সম্ভব নয়। কারণ যে পরিমাণে ভিড় হয় তাতে বিশ্বভারতীর হেরিটেজ স্থানগুলি রক্ষা করার অগ্রাধিকার আমাদের আগে দিতে হবে। ফলে দোলের পরে একটি নির্দিষ্ট দিনে সকলকে নিয়ে বসন্ত উৎসব আয়োজিত হবে।” এ বিষয়ে বিশ্বভারতী ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে গত বছরের মতো এবারও বোলপুরের বিভিন্ন পাড়ায় ও সোনাঝুরি এলাকায় বসন্ত উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।