TMC

‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে পথে শ্যাম

শহরের পথে ছুটির সকালে শ্যামবাবুর অনুগামীদের ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি শুনে অনেকেই কৌতূহলে দরজা দিয়ে বাইরে মুখ বের করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:০৯
Share:

চায়ের আড্ডায় অনুগামীদের নিয়ে জনসংযোগ। নিজস্ব চিত্র।

গলায় গেরুয়া উত্তরীয়, কপালে লাল সিঁদুর, মুখে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি— রবিবার বিষ্ণুপুরবাসীর সামনে নিজেকে এ ভাবেই মেলে ধরলেন তৃণমূল ছেড়ে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায়। শহরে হনুমানজির বিভিন্ন মন্দির থেকে অন্যান্য বিগ্রহ প্রণাম করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বিজেপিতে যোগ দেওয়া এক বিদায়ী কাউন্সিলর ও অনুগামীরা। বাসিন্দাদের কাছে ডেকে তিনি যে আর তৃণমূলে নেই, বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তা-ও জানালেন শ্যামবাবু।

Advertisement

শনিবার মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শ্যামবাবু ও তাঁর সঙ্গী ন’জন বিদায়ী কাউন্সিলর। এ দিন সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে কর্মীদের নিয়ে শ্যামবাবু প্রথমে যান পাশের হনুমানজির মন্দিরে। সেখানে পুজো দিয়ে মটুকগঞ্জ ঘোরেন। পথে লোকজনের জটল দেখলেই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে তাঁদের কাছে এগিয়ে যান শ্যামবাবু। কুশল বিনিময় করেন।

কথায় কথায় পৌঁছে যান কৃষ্ণগঞ্জে। সেখানে লালজিউ মন্দিরে প্রণাম সেরে মহাবীর জিউ মন্দিরে পুজো দেন। তারপরে বিগ্রহের পায়ের সিঁদুর কপালে ছুঁয়ে ফের কর্মীদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে এগিয়ে যান মাধবগঞ্জের মন্দিরে। সেখানে পুজো দিয়ে এলাকার মানুষের সঙ্গে চা চক্রে যোগ দেন।

Advertisement

শহরের পথে ছুটির সকালে শ্যামবাবুর অনুগামীদের ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি শুনে অনেকেই কৌতূহলে দরজা দিয়ে বাইরে মুখ বের করেন। কেউ কেউ শ্যামবাবুর গলায় গেরুয়া উত্তরীয় দেখে অবাক চোখে তাকান। শ্যামবাবু তাঁদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন। অনেকেও পাল্টা হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান।

কেউ কেউ তাঁর কাছে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কারণ জানতে চান। শ্যামবাবু তাঁদের কাছে অভিযোগ করেন, ‘‘তৃণমূলে থেকে আপনাদের কাজ করতে পারছিলাম না। তাই বিজেপিতে যোগ দিলাম।’’

যদিও বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান শুভাশিস বটব্যাল দাবি করছেন, “গলায় গেরুয়া বসন, কপালে সিঁদুরের তিলক আর মুখে জয় শ্রীরাম বললেন সাধু হওয়া যায় না। ভেকধারীকে দেখে বিষ্ণুপুরের মানুষ হেসে লুটোপুটি খাচ্ছেন।’’

শ্যামবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূল আমার কাছে অতীত। এখন আমি জনসংযোগে সময় দিচ্ছি। শুভেন্দুবাবু বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে যেমন নির্দেশ দেবেন, আমি সে ভাবেই চলব। আপাতত ক্লাবে ক্লাবে, চা দোকানে, মন্দির প্রাঙ্গণে যাচ্ছি।”

বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা অফিসে যাবেন না? শ্যামবাবুরর জবাব, ‘‘এখনই যাচ্ছি না। তবে নির্দেশের অপেক্ষায় আছি। তাছাড়া স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব নিশ্চয় সেখানে যাওয়ার জন্য বলবেন।”

যদিও অন্য সুর বিজেপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের গলায়। শ্যামবাবুকে দলে নেওয় যাবে না বলে গত কয়েক দিন ধরেই বিজেপির স্থানীয় কর্মীরা বিক্ষোভ দেখানো, পথসভা করছিলেন।

সে প্রসঙ্গে শ্যামবাবুর জবাব, ‘‘দলের একটা অংশ হয়ত ব্যক্তিগত ভাবে আমার বিরোধিতা করছে। তবে আমার কাছে তা তাৎপর্যহীন। আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে তাঁরা রাজ্য নেতৃত্বকে বললেই পারেন। তবে আমি যে পরিবারের সদস্য, সেখানকার পছন্দ, অপছন্দই এখন আমার কাছে মূল্য পাবে। যোগদানের আগে ও পরে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অনেকের সঙ্গেই আমার কথা হয়েছে।’’

এ দিনও বিজেপির বিষ্ণুপুর জেলা সাংগঠনিক সভাপতি হরকালী প্রতিহার বলেছেন, ‘‘দলের রাজ্য বা কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে শ্যামবাবু যোগাযোগ করেছেন কি না জানি না, তবে আমার সঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয়নি। কর্মীদেরও বলব, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপরে ভরসা রাখতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement