TMC

অনুব্রতের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ আনা শিবঠাকুরের ‘আপন দেশে’ পঞ্চায়েত প্রধান তাঁর স্ত্রী

বালিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ১৪টি আসন। তার মধ্যে সাতটি পেয়েছে তৃণমূল, ছ’টি বিজেপি। আর একটি আসনে জিতেছেন নির্দল প্রার্থী। তিনি পরে শাসক তৃণমূলে যোগ দেন। বৃহস্পতিবার বোর্ড গঠন ছিল ওই পঞ্চায়েতে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৩ ১৬:৫০
Share:

(বাঁ দিকে) অনুব্রত মণ্ডল এবং লিপিকা মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।

তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা করেছিলেন শিবঠাকুর মণ্ডল। তাঁরই স্ত্রী লিপিকা মণ্ডল এ বার তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান হলেন। বীরভূমের দুবরাজপুরের বালিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান করা হল তাঁকে। ঘটনাচক্রে, একটা সময়ে এই পঞ্চায়েতেরই প্রধান পদে ছিলেন শিবঠাকুর।

Advertisement

বালিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ১৪টি আসন। তার মধ্যে সাতটি পেয়েছে তৃণমূল, ছ’টি বিজেপি। আর একটি আসনে জিতেছেন নির্দল প্রার্থী। তিনি পরে শাসক তৃণমূলে যোগ দেন। বৃহস্পতিবার বোর্ড গঠন ছিল ওই পঞ্চায়েতে। প্রধান নির্বাচনের ভোটাভুটিতে লিপিকা পান আটটি ভোট। পরে তিনি বলেন, ‘‘এই জয় মা-মাটি-মানুষের জয়। এর বেশি আমি কিছু বলতে চাই না। সকলে আমায় চেয়েছে, তাই আমায় ভোট দিয়েছে। আগামী দিনে আমি মানুষের কাছে থাকতে, তাঁদের পাশে থাকতে চাই।’’

গত বছর অনুব্রতকে যখন দিল্লি নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় চলছিল, সেই সময় তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ তুলেছিলেন শিবঠাকুর। তৃণমূল সূত্রে দাবি, শিবঠাকুর এক সময়ে তৃণমূলেই ছিলেন। বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান পদে থাকার সময় তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা ওঠায় শিবঠাকুরকে বাঁচিয়েছিল দল। পরে অবশ্য তাঁকে প্রধানের পদ ছাড়তে হয়। বহিষ্কারও করা হয় দল থেকে। ঠিক তার বছর দুয়েক পর আবার পঞ্চায়েত প্রধান হন শিবঠাকুর। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে অন্য দলে চলে যাওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করায় দুবরাজপুরের দলীয় কার্যালয়ে ডেকে তাঁকে ‘গলা টিপে প্রাণে মারা’র চেষ্টা করেছিলেন অনুব্রত। তাঁর এই অভিযোগ ঘিরে উত্তাল হয় জেলার রাজনীতি। যে দিন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়, ঠিক তার পরের দিনই আদালতে হাজির করিয়ে অনুব্রতকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

Advertisement

শিবঠাকুরের মামলার জেরে অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা তখনকার মতো পিছিয়ে দিতে হয় ইডিকে। তার প্রেক্ষিতে বিরোধীদের দাবি ছিল, অনুব্রতের দিল্লি যাত্রা আটকাতেই শিবঠাকুরকে ঢাল করেছে শাসকদল। দেড় বছরের পুরনো ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে দায়ের হওয়া অভিযোগের বয়ান নিয়েও বহু প্রশ্ন উঠেছিল। যদিও শিবঠাকুর দাবি করেছিলেন, ভয়ে তিনি এত দিন অভিযোগ করেননি। যদিও তা মানতে রাজি নন বিরোধীরা। লিপিকা বালিজুড়ির পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচিত হওয়ায় পুরনো ঘটনা টেনেই বিরোধীদের দাবি, আসলে শিবঠাকুরকে ‘পুরস্কৃত’ করা হল! বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে ওই মামলা যে আসলে পরিকল্পনা করেই করা হয়েছিল, সেটা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এর পর শিবঠাকুর মণ্ডলকে যে পুরস্কৃত করা হবে, সেটাই স্বাভাবিক। মানুষ সব দেখছেন। এর উত্তরও মানুষই দেবেন।’’

লিপিকা অবশ্য এই দাবি মানতে নারাজ। বিরোধীদের ‘পুরস্কৃত’ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘‘একেবারেই নয়। দল আমায় ভালবেসে দিয়েছে। আগের বারও দিয়েছে। আমি নিইনি। এ বারও দিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement