গ্রেফতার ওই ওঝা। —নিজস্ব চিত্র।
ওঝার কাছে ‘চিকিৎসা’ করিয়ে মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা বীরভূমের বোলপুর ১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায়। গ্রেফতার হলেন লক্ষ্মণ সোরেন নামে ওই ওঝা। শুক্রবার এ নিয়ে শোরগোল এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম তুলসী টুডু। দীর্ঘ দিন ধরে মাথাব্যথা এবং পেটের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। কিন্তু, বনডাঙা গ্রামের ওই বাসিন্দাকে চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে গিয়ে এক ওঝার কাছে নিয়ে যায় পরিবার। তার পর থেকে ওঝাই তুলসীর চিকিৎসা করতেন। পরিবারের দাবি, আগে যে ওষুধপত্র খেতেন তুলসী, সেগুলো খেতে বারণ করে দেন ওই ওঝা। তিনি কিছু জড়িবুটি দিয়েছিলেন। সে সবই খেতে হত। পরিবারের অভিযোগ, সেই জড়িবুটি খেয়েই মারা গিয়েছেন ওই রোগী।
পরিবারের সূত্রে খবর, তুলসীর চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন ওই ওঝা। ভয় দেখিয়েছিলেন, ওই টাকা না পেলে রোগী মারা যাবেন। সেই টাকা জোগাড়ের চেষ্টা চলছিল। তার মধ্যে বুধবার তুলসীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ওই দিনই মারা যান তিনি। তার পর শুক্রবার মৃতের পরিবার লক্ষ্মণের বাড়িতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। চিৎকার-অশান্তির মধ্যে স্থানীয়েরা জড়ো হয়ে যান। লক্ষ্মণকে বাড়ির মধ্যে বন্ধ করে গ্রামবাসীরা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে ওই ওঝাকে গ্রেফতার করে শান্তিনিকেতন থানায় নিয়ে যায়।
এলাকাবাসীর দাবি, দীর্ঘ দিন ধরেই চিকিৎসার নামে ব্যবসা করছিলেন অভিযুক্ত। এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, ‘‘এই যুগেও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন কিছু মানুষ। তারই সুযোগ নিচ্ছেন এই ওঝারা। চিকিৎসককে বাদ দিয়ে অনেকে ওঝা, তান্ত্রিকের উপর ভরসা করেন। আমরা ওই অভিযুক্তকে গ্রাম থেকে বার করে দিতে চাই। এই গ্রামে যেন আর উনি না আসেন, সেই দাবি জানাচ্ছি আমরা।’’ পাশাপাশি, তুলসীকে চিকিৎসকের বদলে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য মৃতার শাশুড়ি এবং মেয়েকে দায়ী করেছেন স্থানীয়েরা। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।