উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্র-ছাত্রীকে ‘মাওবাদী’ বলার অভিযোগ উঠেছে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনার প্রতিবাদে এ বার দেশের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য নরেন্দ্র মোদীকে ইমেল করে অভিযোগ জানাল বিশ্বভারতীর ছাত্র সংগঠন এসএফআই। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক ও রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কেও ইমেল করে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
এই বিষয়ে এসএফআই নেতা জয়দীপ সাহা বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র-ছাত্রীদের অগণতান্ত্রিক ভাবে উপাচার্য বরখাস্ত করে রেখেছেন। তার প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অবস্থানে বসেছিলেন ছাত্র-ছাত্রীরা। উপাচার্যর মন্তব্যের প্রতিবাদে আমরা এই ইমেল করেছি।’’
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এক বৈঠকের একটি অডিয়ো ক্লিপ বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও সেই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। বুধবার অর্থাৎ ১৬ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, অধ্যাপিকা এবং আধিকারিকদের নিয়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন উপাচার্য বিদ্যুৎ। ছড়িয়ে পড়া অডিয়ো ক্লিপটি ওই বৈঠকের বলে দাবি করা হয়েছে। তাতে এক ব্যক্তি ভর্ৎসনার সুরে বলছেন, ‘‘আমাদের অনির্বাণ ডাকছে বুদ্ধিজীবীদের বৈঠকে। আমাদের মাস্টারমশাইরা সব গিয়ে হাজির হচ্ছে। তারা কিন্তু এক বার ভাবল না বিদ্যুৎ চক্রবর্তী...তিনটে ছাত্র যারা মাওবাদী, সেখানে অনির্বাণ গিয়ে বৈঠক করে বলছেন, ‘আমরা উপাচার্যকে বহিষ্কার করব’। কেউ কোনও প্রতিবাদ করলাম না! তার মানে কী! উপাচার্য পাঞ্চিং ব্যাগ। মারতে থাক, যে ভাবে খুশি মারতে থাক। আমরা চুপচাপ থাকব। যখন ধান্দা হবে তখন আমি...।’’— এই ব্যক্তির কণ্ঠস্বরের সঙ্গে বিদ্যুতের মিল রয়েছে। দাবি ওটা বিদ্যুতেরই কণ্ঠস্বর।
গত ২৪ এপ্রিল উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের ফাল্গুনী পান, সোমনাথ সৌ ও সঙ্গীতভবনের ছাত্রী রূপা চক্রবর্তীকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। এখনও তাঁরা সাসপেন্ডই আছেন। উপাচার্যের বিরুদ্ধে ধর্নায় বসেন ওই পড়ুয়ারা। সেই ধর্না মঞ্চে গিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেন বোলপুরের বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় । সেই ঘটনার উল্লেখও রয়েছে ওই ক্লিপে। উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাশাপাশি এই ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ করার কথাও ভেবে দেখছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সংগঠন।