—প্রতীকী চিত্র।
কেউ বাড়ির কাছাকাছি চাকরির জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) পরীক্ষায় বসেছিলেন। কেউ পদোন্নতির জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে চাকরি খুইয়ে এখন তাঁদের আক্ষেপই সম্বল।
এসএসসি-র নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট ২০১৬ সালের প্যানেলকে পুরো বাতিল করে দিয়েছে। তার ফলে রাজ্যে ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে আমোদপুর চৌরঙ্গীপাড়ার বাসিন্দা কৃষ্ণা ঘোষ। তিনি পিএসসি পরীক্ষা দিয়ে বাংলা শিক্ষিকা হিসেবে ২০১৮ সালে ঝাড়গ্রামের সরকারি বোলাগড়িয়া নিউ ইন্টিগ্রেটেড গভর্নমেন্ট স্কুলে যোগ দেন। বাড়ির কাছাকাছি আসার জন্য ২০১৬ সালে এসএসসি-র পরীক্ষায় বসেন এবং প্যানেল ভুক্ত হন। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে অপেক্ষাকৃত বেশি বেতনের চাকরি ছেড়ে শিক্ষিকা হিসেবে পূর্ব বর্ধমানের কালনার বাদলা হাই স্কুলে যোগ দেন। চাকরি বাতিল হয়ে যাওয়ার খবরে মানসিক ভাবে বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে তাঁদের গোটা পরিবার। কৃষ্ণার স্বামী বিশ্বজিৎ পালও হুগলির একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। তাঁরা বলেন, ‘‘লজ্জায় কাউকে মুখ দেখাতে পারছি না। চাকরি যাওয়ার চেয়ে সৎ ভাবে পরীক্ষা দিয়েও দুর্নীতির দায় ঘাড়ে চেপে যাওয়ায় মানসিক ভাবে বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছি।’’
একই অবস্থা সাঁইথিয়া হাই স্কুলের দুই শিক্ষকেরও। ওই স্কুলে চার জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জন মধ্যপ্রদেশে ‘ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজ়েশন’-এ (ডিআরডিও) মোটা বেতনের চাকরি ছেড়ে ২০১৯ সালে ওই স্কুলে শিক্ষকতার কাজে যোগ দেন।
অন্য জনও একই বছরে ‘পাস গ্রাজুয়েট’ থেকে ‘পোস্ট গ্রাজুয়েট’ শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তাঁরা কিছু মন্তব্য না করলেও, ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জগবন্ধু রায় বলেন, ‘‘এক জন বাড়ির কাছাকাছি চাকরি করার জন্য মধ্যপ্রদেশের চাকরি ছেড়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। অন্য জন পদোন্নতির জন্য। দু’জনের চাকরিই চলে গেল।’’