রঙিন: বিষ্ণুপুর মহকুমা অফিসের বাইরে। নিজস্ব চিত্র
এক ডাকে সবাই চেনেন পর্যটন নগরীকে। এ বারে আসছে নিজস্ব চিহ্নও। মহকুমা প্রশাসন বিষ্ণুপুরের ‘লোগো’ তৈরির জন্য একটি প্রতিযোগিতার ডাক দিয়েছে। রয়েছে আরও সুযোগ। স্বর্ণচরি আর বালুচরির মডেল হওয়ার।
সকাল থেকে তাই ক্যামেরা হাতে বিষ্ণুপুর মহকুমা অফিসের বাইরে ভিড়।
সকালের কড়া রোদকে পাত্তা না দিয়ে পড়েছে নিজস্বী তোলার হিড়িক। মহকুমা প্রশাসনিক ভবন, কোষাগার ভবন এবং বিষ্ণুপুর উপসংশোধনাগারের পাঁচিলে ছবি আঁকা হয়েছে। তার সামনে দাঁড়িয়ে তুলতে হবে নিজস্বী। আপলোড করতে হবে ফেসবুকে। আর ‘স্ক্রিনশট’ পাঠিয়ে রাখতে হবে নির্দিষ্ট নম্বরে।
ছবিতে লাইক, কমেন্ট, শেয়ারের নিরিখে সেরা দশ জনকে পুরস্কৃত করবে মহকুমা প্রশাসন। মিলবে বালুচরি আর স্বর্ণচরির মডেল হওয়ার সুযোগ।
সম্প্রতি এই মর্মে মহকুমা প্রশাসন নির্দেশিকা জারি করেছে। হঠাৎ এই ভাবনা কেন? মহকুমাশাসক মানস মণ্ডল বলেন, ‘‘নিজস্বী প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য একটাই। বিষ্ণুপুরের কথা আরও মানুষের কাছে ছড়িয়ে দেওয়া। সেই সূত্রে যদি বিষ্ণুপুরের বালুচরির মডেলও পাওয়া যায়, তাহলে সোনায় সোহাগা।’’ তিনি জানাচ্ছেন, ভবিষ্যতে বালুচরি আর স্বর্ণচরির অনলাইন বিপণনের কথা ভাবা হচ্ছে। এটা সেই বিজ্ঞাপনের গোড়ার ধাপ। বিষ্ণুপুরের বালুচরি শিল্পী হলধর দাস এবং অমিতাভ পাল বলছেন, ‘‘বালুচরিতে লোগো থাকলে আসল-নকল বিচার হয়ে যাবে। শিল্প-শিল্পী-ক্রেতা, সবারই লাভ।’’
এ দিকে, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হতেই মোবাইল হাতে হাজির ছাত্রী কাজী মরমিনা ইয়াসমিন, মৌরানি দাস এবং বধূ সুদেষ্ণা চক্রবর্তী, পম্পা মণ্ডলরা। তাঁরা বলেন, ‘‘নিজেদের শহরের বালুচরির মডেল যদি হতে পারি, তার থেকে ভাল আর কী হয়!’’ শহরের বাইরে থেকেও নিজস্বী তুলতে আসছেন অনেকে। চিত্রিত দেওয়ালের সামনে নিজস্বী তুলে পাত্রসায়র ব্লকের রাজু মিদ্যা বললেন, ‘‘এত দিন শুনতাম দেওয়ালের কান আছে। এখানে এসে দেখলাম, দেওয়ালের প্রাণও আছে।’’
আপাতত পাঁচিলের বাইরের ভিড় সামলাতে হিমসিম খাচ্ছেন সিভিক ভল্যান্টিয়াররা। আর ফাঁকা দেখে তাঁদেরই দু’-এক জন রঙিন দেওয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে তুলে নিচ্ছেন নিজস্বী।