ছবি: সংগৃহীত
ফের সম্মান পাচ্ছে কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল অ্যান্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশন। এ বার কলকাতার রেড রোডে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ওই স্কুলের পড়ুয়াদের ‘আউটস্ট্যান্ডিং পারফর্ম’-এর জন্য ৬ সেপ্টেম্বর কলকাতার নজরুল মঞ্চে পুরস্কৃত করা হবে স্কুলকে। কলকাতা বিকাশ ভবনে রাজ্য সরকারের শিক্ষা দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর সুকান্ত বসুর চিঠি বুধবার পৌঁছতেই খুশির আমেজ ছড়িয়ে গিয়েছে পড়ুয়া, শিক্ষক, শিক্ষিকা অভিভাবক ও পরিচালন সমিতির সদস্যদের মধ্যে।
ঘটনা হল, কলকাতার রেড রোডে এ বার ৭৩ তম স্বাধীনতা দিবসের উদ্যাপন অনুষ্ঠানে পারফর্ম করার সুযোগ পাওয়াই সম্মানের ছিল কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল অ্যান্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশনের পড়ুয়াদের কাছে। কলকাতার বাইরে মাত্র চারটি বাছাই স্কুল ডাক পেয়েছিল। সেই তালিকায় ছিল সিউড়ির ওই স্কুলও। ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি’— রবীন্দ্রনাথের গানের তালে নাচে অংশ নিয়ে মাতিয়ে দিয়েছিল স্কুলের ৪৫ জন ছাত্রছাত্রী।
তার আগে ১৮ দিন কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে থেকে প্রশিক্ষণ পর্ব শেষে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে ১৫ অগস্ট অনুষ্ঠানে নিজেদের নিংড়ে দিয়েছিল বীরভূমের গ্রামীণ স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। তখনও যে অবাক হওয়ার আরও বাকি ছিল বুধবারের চিঠিতেই সেটা প্রমাণ হল। স্কুলের প্রধান শিক্ষক দুই পড়ুয়াকে নিয়ে উপস্থিত থেকে পুরস্কার নেবেন। মোট পাঁচটি স্কুল পুরস্কৃত হবে। কলকাতার নামী তিন স্কুল, দক্ষিণ ২৪ পরগণার একটি স্কুলের সঙ্গে যদুরায়ও রয়েছে। জানা গিয়েছে, বড় অঙ্কের আর্থিক পুরস্কার রয়েছে স্কুলগুলির জন্য। সিউড়ি জেলা সদর থেকে কিছু দূরে গ্রামীণ এলাকায় অবস্থিত কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল অ্যান্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশন। কিন্তু, সিউড়ি ১ ব্লকের স্কুল আর পাঁচটা স্কুলের থেকে একেবারে আলাদা। এলাকাবাসী, পরিচালন সমিতি, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অবশ্যই বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের মিলিত চেষ্টায় ভিন্ন উচ্চতায় পৌঁছেছে। স্কুলের পরিকাঠামো, পঠনপাঠন তো আছেই, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও স্কুলের পড়ুয়ারা যথেষ্ট এগিয়েছে। একাধিক বার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জেলার হয়ে রাজ্য প্রতিনিধিত্বও করেছে পড়ুয়ারা। ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে রাজ্য কলা উৎসবে ভাদু ও ভাঁজো গানে অনুষ্ঠান করেছিল পড়ুয়ারা। পুরস্কৃতও হয়েছিল।
‘‘রেড রোডে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সেরা পারফর্ম করার জন্য পুরস্কার পাওয়া অনন্য কৃতিত্বের’’, বলছেন ওই স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকা ও নাচে অংশ নেওয়া পড়ুয়ারা। প্রধান শিক্ষক কল্যাণ ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘স্কুলের মুখ উজ্জ্বল করেছে পড়ুয়ারা। আমি গর্বিত ওদের জন্য। এটা সারা জীবনের সুখস্মৃতি হয়ে থাকবে।’’ অন্য দিকে নাচের দলে থাকা রিমন দাস, বৈশাখী ভণ্ডারি রিমা হাঁসদা, পরিমল গোস্বামী, রাজেশ মহান্তরা বলছে, ‘‘এত বড় সুযোগ কোনও দিন পাব, এত বড় মঞ্চে অনুষ্ঠান করব, সেটাই স্বপ্ন ছিল। সেখানে পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।’’