শুক্রবার সিউড়িতে তৃণমূলের মিছিল। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
কর্মীদের কাছে ‘কঠিন সময়’, অনেক কর্মীই কার্যত দিশেহারা বলে বুঝতেও পারছেন বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। রাশ ধরে রাখতে একাধিক কর্মী বৈঠকও হয়েছে। এ বার কর্মীদের মনোবল বাড়াতে ‘এক’ ও ‘একত্রিত’ থাকার বার্তা দিলেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কোনও দিনই তেমন ‘মধুর’ নয়। তবু অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরে সংগঠনকে মজবুত রাখতে দলের কঠিন সময়ের প্রসঙ্গ টেনে এনেই কর্মীদের এই বার্তা বলে মনে করছেন দলের নেতা-কর্মীরা।
শুক্রবার দুপুরে কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতি, অত্যধিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং বিলিকিস বানোর সাজাপ্রাপ্ত ধর্ষণকারীদের মুক্তির প্রতিবাদে সিউড়িতে একটি মিছিল করল তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা সংগঠন। সিউড়ি জেলা কার্যালয় থেকে ওই মিছিল বের হয়। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন বীরভূম লোকসভার সাংসদ শতাব্দী রায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী সহ মহিলা সংগঠনের নেতা কর্মীরা। একটি পথসভাও হয়।
মিছিলে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারি নিয়ে সরাসরি প্রতিবাদ না হলেও বক্তব্য রাখতে গিয়ে বীরভূমের সাংসদ বলেন, ‘‘আমরা তৃণমূলের সবাই এক এখন সেটা প্রমাণের সময়। আমরা সমস্ত লড়াই, সমস্ত বিরোধিতা, সমস্ত বদমায়েশি এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে ঘটানো যে কোনও ঘটনার প্রতিবাদ করব।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমাদের দলের মন্ত্রী থেকে শুরু করে কর্মীদের উপর যে কোনও আঘাত যে কোনও অপমান আসুক না কেন, আমরা তার জন্য লড়ব। আইন আইনের পথে চলবে। তবে যেগুলি ইচ্ছাকৃত ভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ঘটনা, আমরা সেইগুলির প্রতিবাদ করব। আমরা এক সঙ্গে আছি, তৃণমূল এক আর বীরভূমের তৃণমূল একত্রিত এটাই আমাদের বার্তা।’’
শতাব্দী রায়ের এই বক্তব্য শুনে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে শাসক দলের নেতা, মন্ত্রীদের প্রসঙ্গে সরাসরি মন্তব্য না করলেও তাঁর বক্তব্য সেই দিকই ইঙ্গিত করে। অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পরেই তাঁর ক্ষমতা কিছুটা খর্ব করা প্রসঙ্গে এ দিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শতাব্দী রায় বলেন, ‘‘না না কিছু কমেনি। ওগুলো তোমরা (সংবাদ মাধ্যম) কমাচ্ছো, বাড়াচ্ছো, হিরো বানাচ্ছো, ভিলেন বানাচ্ছ প্রচুর দায়িত্ব নিয়ে ফেলেছ।সেরকম কিছু না। তিনি নেই বলে অনেকগুলো জায়গা ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে। দিদি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) নিশ্চয় সেই ভাবে করছেন।’’ এর পরেই ফিরহাদ হাকিমকে জেলে ভরা প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘তিনি ইডি, সিবিআই এর মাথা নাকি? তিনি বলে বলে করছেন মানে তিনি সব জানেন। তাহলে তিনি উত্তর দিলেই ভাল করবেন।’’
অন্য দিকে, গরুপাচার কাণ্ডে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির প্রসঙ্গে শতাব্দী বলেন, ‘‘প্রমাণ হোক। তারপর এই নিয়ে কথা বলা যাবে।’’