পাশাপাশি: শতাব্দী রায় ও অনুব্রত মণ্ডল। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।
তিন বছর পরে সিউড়ি পুরসভায় পা রাখলেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। থাকলেন পুরসভার বৈঠকে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠল, সদর শহরের পুরসভা এবং সাংসদের মধ্যে এত দিনের ‘দূরত্ব’ কি তবে মিটল?
সোমবার পুরসভার ওই বৈঠকের পরেই সাংসদ চলে যান সিউড়িতে, তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ে। সেখানে দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এবং দলীয় কর্মীদের সঙ্গে একটি আলোচনা পর্ব সারেন। এমনিতে বীরভূমের সাংসদ নির্বাচিত হলেও জেলা সভাপতির সঙ্গে শতাব্দীর সমীকরণ খুব ‘মসৃণ’ নয় বলেই দলের অন্দরে চর্চা রয়েছে। একাধিকবার অনুব্রত-শতাব্দী বিরোধিতা প্রকাশ্যেও এসেছে। জেলা সভাপতির কিছু ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যের সমালোচনাও একাধিক বার শোনা গিয়েছে সাংসদের মুখে।
ফলে, এ দিন জেলা সভাপতির সঙ্গে আলোচনার পরে সেই ‘দূরত্ব’-ও কিছুটা মিটল কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও তৃণমূলের অন্দরের খবর, বিধানসভা ভোটের আগেই ‘বোঝাপড়া’র মাধ্যমে সেই সংঘাত মেটানো হয়েছে। বস্তুত, অনুব্রত নিজেও এ দিন বলেছেন, ‘‘শতাব্দীর সঙ্গে আমার আগে কথা হয়েছিল। ও আমাকে আগেই বলেছিল যে, ওর এলাকাগুলি ঘুরে দেখবে। আমি বলেছিলাম, আগে টাউনশিপগুলো যাও।’’ এর পরেই তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘২০২৪-এ তো আমাকে আবার দুটো এমপি আসন জিততে হবে। তাতে শতাব্দীরও গুরু দায়িত্ব আছে।’’
এ দিন জেলা সদরে তিনটি বৈঠকে যোগ দেন সাংসদ শতাব্দী। প্রথমে তিনি প্রশাসন ভবনে জেলাশাসক বিধান রায়, বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ির সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনার সম্ভাব্য ‘তৃতীয় ঢেউ’য়ে প্রভাব পড়তে পারে শিশুদের উপরে। তাই আগে থেকেই শিশুদের চিকিৎসার জন্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। সেখানে সাংসদের অর্থ তহবিল থেকে কিছু সহায়তার মেলার ইঙ্গিতও মিলেছে।
শতাব্দী রায় বলেন, ‘‘তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের কথা মাথায় রেখে কী কী প্রস্তুতি নেওয়া উচিত, সে ক্ষেত্রে সাংসদ তহবিলের টাকা কী ভাবে কাজে লাগানো যায়, এ সব নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’
সেখান থেকে সাংসদ যান পুরসভায়। সেখানে প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন, সদস্য এবং সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীর সঙ্গে শতাব্দীর আলোচনা হয়। মূলত শহরের উন্নয়ন নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
তৃণমূলের অন্দরের খবর, শতাব্দীর সঙ্গে পুরসভার তৃণমূল নেতৃত্বের সম্পর্কও ‘মসৃণ’ ছিল না। বেশ কয়েক বছর আগে সাংসদের দেওয়া অ্যাম্বুল্যান্স পুরসভা ফিরিয়ে দেওয়া নিয়েই মতবিরোধের সূত্রপাত। শতাব্দী নিজে অবশ্য কোনও রকম ‘দূরত্ব’-এর কথা মানতে চাননি। এ দিন সংবাদমাধ্যম ওই প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘তাই কি? দূরত্ব তো ছিল না!’’