ঘটনাস্থলে শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
আধ ঘণ্টা আগে গলির নড়বড়ে পাঁচিল নিয়ে বাড়িতে কথা হচ্ছিল। আর সে পাঁচিলেই যে চাপা পড়ে বাড়ির মেয়ের প্রাণ যাবে, কে জানত! বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ি ঢোকার মুখে হুড়মুড়িয়ে গায়ের উপরে ভেঙে পড়া পাঁচিলের নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হল সঙ্গীতা মাহাতো (১২) নামের এক ছাত্রীর। পুঞ্চার পাকবিড়রা গ্রামের ওই ঘটনায় শুক্রবারও শোকস্তব্ধ এলাকা। এ দিন পাকবিড়রা জুনিয়র হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রীর দেহের ময়না-তদন্ত করানো হয়।
এ দিন সকালে সঙ্গীতার বাড়িতে ঢোকার মুখে ধসে যাওয়া পাঁচিলের মাটি সরানো হচ্ছিল। উঠোনে মহিলাদের ভিড়। সেখান থেকে থেকে কান্না ভেসে আসছিল। মৃত ছাত্রীর কাকা অনিল মাহাতো বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ি ঢোকার মুখে গলির পাঁচিলটা একেবারে নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিল। টানা ক’দিনের বৃষ্টিতে আরও জীর্ণ হয়ে পড়েছিল। শীঘ্র ওই পাঁচিল ভেঙে ফেলা দরকার বলে বৃহস্পতিবার বিকেলেই বাড়িতে আলোচনা হয়। তাই বলে পাঁচিলে চাপা পড়ে আমাদের বাড়ির মেয়ের জীবন চলে যাবে ভাবিনি।’’ সঙ্গীতার বাবা সুনীল মাহাতো পরিযায়ী শ্রমিক। লকডাউনের সময়ে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। দুই ভাই-বোনের মধ্যে সঙ্গীতা বড়। বৃহস্পতিবার বিকেলে টিউশন নিয়ে বাড়ি ফিরছিল। সে সময়েই দুর্ঘটনা ঘটে।
উঠোনে মহিলাদের ভিড়। তাঁদের মধ্য থেকে এক জন বলে ওঠেন, ‘‘হুড়মুড়িয়ে পাঁচিল ধসে পড়ার শব্দ বাড়ি থেকে পেয়েছিলাম। সেই সঙ্গে একটা আর্তনাদ। সবাই মিলে পড়িমরি করে ছুটে গিয়ে দেখি, মাটির পাঁচিলটা পুরোটাই ধসে গেছে। তলা থেকে গোঙানি শোনা যাচ্ছিল!’’ বাসিন্দারা জানান, মাটি সরিয়ে সবাই সঙ্গীতাকে উদ্ধার করেন। গ্রামেরই এক জনের গাড়ি নিয়ে পুঞ্চা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সঙ্গীতাকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ডাক্তার জানিয়ে দেন, রাস্তাতেই তার মৃত্যু হয়েছে। বিডিও (পুঞ্চা) অনিন্দ্য ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই পরিবারকে রাজ্য সরকারের সমব্যথী প্রকল্প থেকে সহায়তা ও পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে সাময়িক ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। যাতে দ্রুত দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর আর্থিক সাহায্য পাওয়া যায়, তা দেখা হচ্ছে।’’