নেতাজির মূর্তির এই অবস্থা। নিজস্ব চিত্র
নেতাজির পা ভেঙে গিয়েছে দীর্ঘদিন আগে। পা ভেঙে গিয়েছে তাঁর ঘোড়ারও। রবীন্দ্রনাথের অবস্থাও তথৈবচ। এমনই অবস্থা দেখা যাচ্ছে সাঁইথিয়ার হাতোড়া পঞ্চায়েত অফিসের পাশে শিশু উদ্যানে। অথচ কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। এর ফলে স্থানীয় জনমানসে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে পার্কের ওই সব মূর্তির হাল ফেরানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর আটেক আগে সাঁইথিয়ার হাতোড়া পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে পঞ্চায়েত অফিসের পাশেই বেশ কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে একটি শিশুউদ্যান নির্মাণ করা হয়। সেই উদ্যানে কচিকাঁচাদের বিভিন্ন খেলনার উপকরণ-সহ একটি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তিও তৈরি করা হয়। কিন্তু বছর দু’য়েক আগেই নেতাজির মূর্তির একটি পা ভেঙে যায়। পা ভেঙে সেখানে থাকা ঘোড়াটিরও। তা মেরামতের পরিবর্তে নেতাজির ভাঙা পা’টি দড়ি দিয়ে ঘোড়ার গলায় কোনও রকমে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের মূর্তিতেও ফাটল দেখা দিয়েছে। সংস্কার না করা হলে ওই মূর্তিরও একই হাল হবে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি।
পার্কের অবস্থাও তথৈবচ। সংস্কারের অভাবে যত্রতত্র গজিয়ে উঠেছে ঝোপজঙ্গল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পার্কটি এখন কার্যত গবাদি পশুর চারণভূমি হয়ে উঠেছে। অধিকাংশ সময় বাচ্চাদের খেলার সামগ্রীগুলিতে গরু-ছাগল বাঁধা থাকে। খেলতে পারে না এলাকার কচিকাঁচারা। তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী কমল বাউড়ি, প্রিয়াঙ্কা বাউড়িরা বলছে, ‘‘পার্কে সবসময় গরু-ছাগল বাঁধা থাকে বলে আমরা খেলতে পারি না।’’
পার্কের এই পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দা বৈদ্যনাথ মণ্ডল, সুরেশ দাসরা বলেন, ‘‘পার্ক সংস্কারের জন্য বার বার পঞ্চায়েতের দৃষ্টি আর্কষণ করা হয়েছে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।’’ বিজেপির স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা কমিটির সদস্য কাশীনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘ওইভাবে ভগ্নপ্রায় মূর্তি ফেলে রাখা মানে মনীষীদেরই অবমাননা করা। পঞ্চায়েতের উচিত অবিলম্বে ওইসব মূর্তি সংস্কার করা।’’
সংশ্লিষ্ট হাতোড়া পঞ্চায়েতের প্রধান অপর্ণা বিত্তার বলেন, ‘‘আমি সবে প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি। তারপরই পার্ক সংস্কারের জন্য প্রায় ৮ টাকার একটি প্রকল্পের প্রস্তাব নিয়েছি। গবাদি পশুর উপদ্রব রুখতে শুধু প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ হলেই হবে না, চাই সার্বিক সচেতনতা বোধ। তাই এলাকার বাসিন্দাদের সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে।’’