উদ্ধারের পর শিশুকল্যাণ কমিটির নির্দেশে ওই নাবালিকা ও তার বোনের ঠাঁই হয়েছে সরকার পোষিত হোমে। প্রতীকী চিত্র।
বিয়ের নামে বছর তেরোর এক নাবালিকাকে ভিন্ রাজ্যে বিক্রির চেষ্টার অভিযোগ উঠল তারই দিদিমার বিরুদ্ধে। সময়ে খবর পেয়ে তা রুখতে সক্ষম হল প্রশাসন। সিউড়ি ১ ব্লকের ভুরকুনা পঞ্চায়েত এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে। এলাকাটি সদাইপুর থানার অন্তর্গত। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্ধারের পর শিশুকল্যাণ কমিটির (সিডব্লিউসি) নির্দেশে বৃহস্পতিবার ওই নাবালিকা ও তার বোনের ঠাঁই হয়েছে সরকার পোষিত হোমে।
পুলিশ, প্রশাসন ও চাইল্ড লাইন সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তেরোর ওই নাবালিকার মা মারা গিয়েছে। বাবা মদ্যপ, সংসারের খেয়াল রাখেন না বলে পড়শিদের দাবি। বছর আটেকের বোনের সঙ্গে দাদু দিদিমার কাছেই থাকত ওই নাবালিকা। স্থানীয় একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। অভিযোগ, মোট টাকার বিনিময়ে বুধবারই ভিন রাজ্যের এক যুবকের হাতে নাতনিকে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা সেরেছিলেন প্রৌঢ়া। পাত্রও পৌঁছে গিয়েছিল এলাকায়। তবে বর বেশে নয়। সেই খবর বুধবার বিকেলে হেল্পলাইন ১০৯৮-এর মাধ্যমে জানতে পারে চাইল্ড লাইন ও প্রশাসন।
ব্লক অফিস থেকে আধিকারিক চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধি ও সদাইপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে জানতে পারেন ঘটনা সত্যি। নাবালিকার সঙ্গে কথা বলে প্রশাসন ও চাইল্ড লাইন। তারপরই নাবালিকার দিদিমাকে সতর্ক করা হয়। সূত্রের দাবি, ওই প্রৌঢ়া বিয়ে দেওয়ার কথা মানলেও বিক্রির অভিযোগ মানতে চাননি। বিডিও (সিউড়ি ১) শিবাশিস সরকার বলেন, ‘‘পুরো ঘটনা একটি জেনারেল ডায়েরি আকারে পুলিশকে দেওয়া হয়েছে।’’ পুলিশ ওই মহিলার গতিবিধি নজরে রাখছে।
প্রশাসনের কাছে মেয়েটি জানায় সে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায়। তবে ওখানে থাকতে চায় না। বোনকেও দাদু দিদিমার কাছে রাখতে চায়নি নাবালিকা। বুধবার রাতে চাইল্ড লাইনের অফিসেই ছিল দুই বোন। বৃহস্পতিবার সিডব্লিউসিতে তোলা হলে কমিটি দুই বোনকে বোলপুরের একটি হোমে পাঠায়। প্রশাসন জানিয়েছে দুই বোনের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক নিরুপম সিংহ বলেন, ‘‘জেলায় নাবালিকা বিয়ে রুখতে দিন কয়েক আগে জেলা স্তরে একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে অ্যাকশন প্ল্যানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে নাবালিকা বিয়ে সংক্রান্ত খবর পেতে চারটি স্তরে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ করা হবে।’’