—প্রতীকী চিত্র।
দীর্ঘ একমাসের বেশি সময় ধরে চলা লড়াইয়ের প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয়েছে শনিবার। মাঠে ময়দানে টানা প্রচার, প্রার্থী নির্বাচন, দলীয় প্রার্থীদের ভোট বৈতরণী পার করার চেষ্টা— সব মিলিয়ে নাওয়া খাওয়া ভুলে রাজনীতির ময়দানেই পড়ে থেকেছেন সব দলের নেতারা। তাঁরা শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব কতটা পালন করে উঠতে পারলেন তার উত্তর জানা যাবে মঙ্গলবার। তবে শনিবারের ভোট যুদ্ধ শেষে রবিবারের ছুটির দিনটা কিছুটা অবসরেই কাটালেন শাসক দলের নেতারা। যদিও বিরোধী দলের নেতাদের দাবি, ‘‘লড়াই এখনও শেষ হয়নি, তাই বিশ্রামের প্রশ্নই নেই।’’
রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ গত একমাস ধরে লাগাতার প্রচার চালিয়ে গিয়েছেন নিজের বিধানসভার বিভিন্ন এলাকায়। ভোটপর্ব মিটতেই এ দিন কলকাতা রওনা দেন চন্দ্রনাথ। তৃণমূল সূত্রে দাবি, আসন্ন রাজ্যসভার নির্বাচন সংক্তান্ত বিষয়ে আলোচনা করতে রাজ্যের সমস্ত তৃণমূল বিধায়কদেরই ডাকা হয়েছে কলকাতায়। চন্দ্রনাথ বলেন, “টানা এক মাস নির্বাচনের প্রচারে ব্যস্ত থাকায় দফতরের অনেক কাজই বাকি পড়ে আছে। সোমবার থেকে সেসব কাজে হাত দেব। রাজনীতিতে ছুটি বলে কিছু হয় না।” জেলায় এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে তৃণমূলের অন্যতম মুখ ছিলেন বিকাশ রায়চৌধুরী। একদিকে তিনি সিউড়ির বিধায়ক, অন্য দিকে আবার ইলামবাজার থেকে জেলা পরিষদের প্রার্থী। বিকাশ বলেন, “প্রচারের কাজ শেষ হলেও নানা রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকেই যায়। জেলা জুড়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগিয়ে ছিলাম, তা সর্বাংশে সফল হওয়ায় অনেকটা স্বস্তি তো রয়েইছে।”
এ বার শাসক দলের আর এক প্রধান মুখ ছিলেন নানুরের চর্চিত নেতা কাজল শেখ। প্রথমবার নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমে প্রচারে কোনও ঢিলে দেননি তিনি। তিনি বলেন, “আমি ৩৬৫ দিনই দলের সঙ্গে থাকি। তবে টানা একমাস প্রচারের পর একটু ব্যক্তিগত কাজ গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। কয়েকটা দিন কিছু ব্যক্তিগত কাজ ও দলীয় কাজে আমি সিউড়িতে থাকব।”শাসক দলের নেতারা নির্বাচন থেকে কিছুটা ‘মুখ ফিরিয়ে’ অন্য কাজে থাকলেও বিরোধী দলের হাবভাবে তেমন কোনও ইঙ্গিত নেই। কিছুদিনের মতোই এ দিনও সারাদিন জেলা কার্যালয়েই কাটিয়েছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ। জেলার ১৯টি ব্লকেই ভোট গণনার জন্য দলের কাউন্টিং এজন্টদের ছবি তোলা, ফর্ম ফিলাপ করার কাজে এ দিন ব্যস্ত ছিলেন তিনি। পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন বুথে অবাধ নির্বাচন না হওয়ার অভিযোগ ওঠায় সেখানে পুনর্নির্বাচনের দাবি নিয়েও দলীয় নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন তিনি। গৌতম বলেন, ‘‘ভোট শেষ হলেও ব্যস্ততার কোনও বদল ঘটেনি। যতক্ষণ না পর্যন্ত অবাধে ভোট গণনা শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ চাপ একই রকম থাকছে। হয়তো রাস্তায় নেমে প্রচার করতে হচ্ছে না, কিন্তু তাই বলে দুই দিন আগে আর আজকের ব্যস্ততায় বিশেষ ফারাক নেই।”